Friday, September 18, 2015

জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাত

জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এর ছালাত / মুযাফফর বিন মুহসিন / ছালাতের পদ্ধতি

(১) ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন না করা :
ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা এক গুরুত্বপূর্ণ সুন্নাত। এর পক্ষে শত শত ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে অধিকাংশ মুছল্লী উক্ত সুন্নাতকে প্রত্যাখ্যান করেছে। উক্ত ঠুনকো যুক্তিগুলোর অন্যতম হল, কতিপয় জাল ও যঈফ হাদীছ। নিম্নে এ বিষয়ে আলোচনা পেশ করা হল-
(১) عَنْ عَلْقَمَةَ قَالَ عَبْدُ اللهِ بْنُ مَسْعُوْدٍ أَلَا أُصَلِّىْ بِكُمْ صَلَاةَ رَسُوْلِ اللهِ ؟ قَالَ فَصَلَّى فَلَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلَّا مَرَّةً.
(১) আলক্বামা (রাঃ) বলেন, একদা আব্দুল্লাহ ইবনু মাস‘ঊদ (রাঃ) বললেন, আমি কি তোমাদেরকে রাসূল (ছাঃ)-এর ছালাত শিক্ষা দিব না? রাবী বলেন, অতঃপর তিনি ছালাত পড়ালেন। কিন্তু একবার ছাড়া তিনি তার দুই হাত উত্তোলন করলেন না।[1] উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন কিতাবে আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর নামে আরো কতিপয় বর্ণনা উল্লেখ করা হয়েছে।[2]
তাহক্বীক্ব : হাদীছটি যঈফ। ইমাম আবুদাঊদ (২০৪-২৭৫ হিঃ) উক্ত হাদীছ বর্ণনা করে বলেন, هَذَا حَدِيْثٌ مُخْتَصَرٌ مِّنْ حَدِيْثٍ طَوِيْلٍ وَلَيْسَ هُوَ بِصَحِيْحٍ عَلَى هَذَا اللَّفْظِ ‘এই হাদীছটি লম্বা হাদীছের সংক্ষিপ্ত রূপ। আর এই শব্দে হাদীছটি ছহীহ নয়’।[3] উল্লেখ্য যে, ভারতীয় ছাপা আবুদাঊদে উক্ত মন্তব্য নেই। এর কারণ প্রকাশকরাই ভাল জানেন। ইমাম তিরমিযী বর্ণনা করেন, আব্দুল্লাহ ইবনুল মুবারক (১১৮-১৮১ হিঃ) বলেছেন,
قَدْ ثَبَتَ حَدِيْثُ مَنْ يَرْفَعُ يَدَيْهِ وَذَكَرَ حَدِيْثَ الزُّهْرِىِّ عَنْ سَالِمٍ عَنْ أَبِيْهِ وَلَمْ يَثْبُتْ حَدِيْثُ ابْنِ مَسْعُوْدٍ أَنَّ النَّبِىَّ لَمْ يَرْفَعْ يَدَيْهِ إِلاَّ فِىْ أَوَّلِ مَرَّةٍ.
‘যে ব্যক্তি রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে তার হাদীছ সাব্যস্ত হয়েছে। অতঃপর তিনি সালেম বর্ণিত যুহরীর হাদীছ পেশ করেন। তবে রাসূল (ছাঃ) একবার ছাড়া রাফ‘উল ইয়াদায়েন করেননি মর্মে ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ সাব্যস্ত হয়নি।[4] উক্ত হাদীছ সম্পর্কে ইবনু হিববান বলেন,
هَذَا أَحْسَنُ خَبَرٍ رَوَى أَهْلُ الْكُوْفَةِ فِىْ نَفْيِ رَفْعِ الْيَدَيْنِ فِي الصَّلاَةِ عِنْدَ الرُّكُوْعِ وَعِنْدَ الرَّفْعِ مِنْهُ وَهُوَ فِي الْحَقِيْقَةِ أَضْعَفُ شَيْءٍ يُعَوَّلُ عَلَيْهِ لِأَنَّ لَهُ عِلَلاً تُبْطِلُهُ.
‘রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ না করার পক্ষে কূফাবাসীদের এটিই সবচেয়ে প্রিয় দলীল হলেও এটিই সবচেয়ে দুর্বল দলীল, যার উপরে নির্ভর করা হয়। কারণ এতে এমন ত্রুটি রয়েছে, যা একে বাতিল বলে গণ্য করে’।[5] আল্লামা ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) আলোচনা শেষে বলেন,
فَثَبَتَ بِهَذَا كُلِّهِ أَنَّ حَدِيْثَ ابْنِ مَسْعُوْدٍ لَيْسَ بِصَحِيْحٍ وَلاَ بِحَسَنٍ بَلْ هُوَ ضَعِيْفٌ لاَ يَقُوْمُ بِمِثْلِهِ حُجَّةٌ وَأَيْنَ يَقَعُ تَحْسِيْنُ التِّرْمِذِىِّ مَعَ مَا فِيْهِ مِنَ التَّسَاهُلِ وَتَصْحِيْحُ ابْنِ حَزَمٍ مِنْ طَعْنِ أُولَئِكَ الْأَئِمَّةِ.
‘অতএব এ সমস্ত দলীল দ্বারা প্রমাণিত হল যে, ইবনু মাসঊদ (রাঃ) বর্ণিত হাদীছ ছহীহ নয়, হাসানও নয়। বরং যঈফ। এরূপ হাদীছ দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় না। কোথায় থাকবে ইমাম তিরমিযীর হাসান বলে মন্তব্য করা, যাতে আছে শৈথিল্য? এছাড়া হাদীছের ইমামগণের দোষারোপের মুখে ইবনু হাযামের ছহীহ হওয়ার মন্তব্য কিভাবে গ্রহণযোগ্য হবে?[6]
জ্ঞাতব্য : উক্ত মন্তব্য সমূহের পরও আলবানী এই বর্ণনাকে ছহীহ বলে মন্তব্য করেছেন। তবে তিনি যারা রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে না, তাদেরকে উক্ত হাদীছের প্রতি আমল করতে নিষেধ করেছেন। তিনি বলেন, ‘রুকূতে যাওয়ার সময় এবং রুকূ থেকে উঠার পর রাফ‘উল ইয়াদায়েন করার পক্ষে রাসূল (ছাঃ)-এর পক্ষ থেকে অনেক হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। বরং মুহাদ্দিছ ওলামায়ে কেরামের নিকট এটি ‘মুতাওয়াতির’ পর্যায়ের বর্ণনা হিসাবে স্বীকৃতি লাভ করেছে। এছাড়া প্রত্যেক তাকবীরেই রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা সম্পর্কে বহু হাদীছ রয়েছে। ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর সূত্র ছাড়া রাসূল (ছাঃ) থেকে এই আমল পরিত্যাগ করার কোন ছহীহ প্রমাণ নেই। তবে ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর হাদীছের উপর আমল করা উচিৎ নয়। কারণ এটি না-বোধক। আর হানাফীসহ অন্যান্যদের নিকট এটি বারবার উল্লেখিত হয় যে, হ্যাঁ-বোধক না-বোধকের উপর প্রাধান্য পায়। একটি হ্যাঁ-বোধক থাকার কারণে যদি এমনটি হয়, তাহলে একটি ঐক্যবদ্ধ জামা‘আত থাকলে এই মাসআলার সিদ্ধান্ত কী হতে পারে?
فَيَلْزَمُهُمْ عَمَلاً بِهَذِهِ الْقَاعِدَةِ مَعَ انْتِفَاءِ الْمُعَارِضِ أَنْ يَّأْخُذُوْا بِالرَّفْعِ وَأَنْ لاَ يَتَعَصَّبُوْا لِلْمَذْهَبِ بَعْدَ قِيَامِ الْحُجَّةِ وَلَكِنَّ الْمُؤَسَّفَ أَنَّهُ لَمْ يَأْخُذْ بِهِ مِنْهُمْ إِلاَّ أَفْرَادٌ مِنَ الْمُتَقَدِّمِيْنَ وَالْمُتَأَخِّرِيْنَ حَتَّى صَارَ التَّرْكُ شِعَارًا لَهُمْ.
‘সুতরাং তাদের উচিৎ হবে, উক্ত মূলনীতির আলোকে বিরোধিতাকে প্রত্যাখ্যান করে এই আমলকে অাঁকড়ে ধরা। অর্থাৎ তারা রাফ‘উল ইয়াদায়েন করবে এবং দলীল সাব্যস্ত হওয়ার পর মাযহাবী গোঁড়ামী প্রদর্শন করবে না। কিন্তু দুঃখজনক হল, পূর্ববর্তী ও পরবর্তীদের মধ্যে কতিপয় ব্যক্তি ছাড়া, তাদের কেউ এই আমল গ্রহণ করেনি। ফলে উক্ত আমল বর্জন করা তাদের অভ্যাসে পরিণত হয়েছে’।[7]
উল্লেখ্য যে, আলবানীর দোহায় দিয়ে অনেকে উক্ত হাদীছ উল্লেখ করে রাফ‘উল ইয়াদায়েনের বিরুদ্ধে কথা বলেন এবং বিভ্রান্তি ছড়ান। কিন্তু আলবানীর মূল বক্তব্য পেশ করেন না। এটা এক ধরনের প্রতারণা। অতএব পাঠক সমাজ সাবধান!
(২) عَنْ عَبْدِ الله قَالَ صَلَّيْتُ مَعَ رَسُوْلِ اللهِ وَأبِىْ بَكْرٍ وَعُمَرَ فَلَمْ يَرْفَعُوْا أَيْدِيْهِمْ إِلَّا عِنْدَ اِفْتِتَاحِ الصَّلَاةِ.
(২) আব্দুল্লাহ (ইবনু মাস‘ঊদ) (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ), আবুবকর ও ওমর (রাঃ)-এর সাথে ছালাত আদায় করেছি, কিন্তু তারা ছালাত আরম্ভের তাকবীর ছাড়া আর কোথাও হাত উত্তোলন করেননি।[8]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি ভিত্তিহীন।[9] ইমাম বায়হাক্বী ও দারাকুৎনী উক্ত বর্ণনা উল্লেখ করে বলেন, মুহাম্মাদ ইবনু জাবের এককভাবে বর্ণনাটি উল্লেখ করেছে। হাম্মাদ থেকে এবং সে ইবরাহীম থেকে যঈফ হাদীছ বর্ণনাকারী।[10]
(৩) عَنِ الْبَرَاءِ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ كَانَ إِذَا افْتَتَحَ الصَّلَاةَ رَفَعَ يَدَيْهِ إِلَى قَرِيْبٍ مِنْ أُذْنَيْهِ ثُمَّ لَا يَعُوْدُ.
(৩) বারা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন ছালাত আরম্ভ করতেন, তখন দুই কানের নিকটবর্তী পর্যন্ত দুই হাত উত্তোলন করতেন। অতঃপর তিনি আর এরূপ করতেন না।[11]
তাহক্বীক্ব : ‘অতঃপর তিনি আর হাত তুলতেন না’ কথাটুকু উক্ত হাদীছের সাথে পরবর্তীতে কেউ সংযোগ করেছে। আর ইমাম আবুদাঊদের ভাষ্য অনুযাযী এটা কূফাতে হয়েছে। কারণ মুসলিম বিশ্বের কোথাও এমনটি ঘটেনি। যেমন ইমাম আবুদাঊদ বলেন,
حَدَّثَنَا سُفْيَانُ عَنْ يَزِيْدَ نَحْوَ حَدِيْثِ شَرِيْكٍ لَمْ يَقُلْ ثُمَّ لَايَعُوْدُ قَالَ سُفْيَانُ قَالَ لَنَا بِالْكُوْفَةِ بَعْدُ ثُمَّ لَايَعْوْدُ. وَرَوَى هَذَا الْحَدِيْثَ هُشَيْمٌ وَخَالِدٌ وَ إِدْرِيْسَ عَنْ يَزِيْدَ لَمْ يَذْكُرُوْا ثُمَّ لَايَعُوْدُ.
‘সুফিয়ান আমাদের কাছে ইয়াযীদ থেকে হাদীছ বর্ণনা করেছেন, যা পূর্বের শারীক বর্ণিত হাদীছের ন্যায়। কিন্তু ‘অতঃপর আর করতেন না’ একথা বলেননি। সুফিয়ান বলেন, ‘পরবর্তীতে কূফায় আমাদেরকে উক্ত কথা বলা হয়েছে’। তিনি আরো বলেন, ‘ইয়াযীদ এই হাদীছটি হুশাইম, খালেদ ও ইদরীস থেকে বর্ণনা করেছেন। কিন্তু ‘অতঃপর পুনরায় আর হাত তুলেননি’ কথাটি উল্লেখ করেননি’।[12] তাছাড়াও হাদীছটি যঈফ। এর সনদে ইয়াযীদ বিন আবু যিয়াদ আছে। সে যঈফ রাবী। ইমাম আহমাদ বলেন, হাদীছটি নিতান্তই যঈফ।[13]
আসলে বর্ণনাটি একেবারেই উদ্ভট; বরং একে জাল বলাই শ্রেয়। কারণ ‘পুনরায় আর করেননি’ এই অংশটুকু কূফাতে কোন ব্যক্তি কর্তৃক সংযোজিত হয়েছে। মুহাদ্দিছ আবু ওমর বলেন, ইয়াযীদ একাকী বর্ণনা করেছে। অনেক মুহাদ্দিছ হাদীছটি বর্ণনা করেছেন, কিন্তু কেউই ‘পুনরায় আর হাত তুলেননি’ এই বক্তব্য উল্লেখ করেননি।[14] ইমাম ইবনু মাঈন বলেন, এই হাদীছের সনদ ছহীহ নয়। ইমাম আবুদাঊদ, ইমাম খাত্বাবী, ইমাম আহমাদ, বাযযার প্রমুখ মুহাদ্দিছ এই হাদীছকে প্রত্যাখ্যান করেছেন। মূলকথা হল, শীর্ষস্থানীয় মুহাদ্দিছগণ এ মর্মে একমত যে, হাদীছের শেষাংশে সংযোজিত বাড়তি অংশটুকু কোন মানুষের তৈরি, হাদীছের অংশ নয়।[15] অতএব উক্ত বর্ণনা কোনক্রমেই গ্রহণযোগ্য নয়।
(৪) حَدَّثَنَا سُفْْيَانُ بِإِسْنَادِهِ بِهَذَا قَالَ فَرَفَعَ يَدَيْهِ فِىْ أَوَّلِ مَرَّةٍ وَقَالَ بَعْضُهُمْ مَرَّةً وَاحَدَةً.
(৪) আবু সুফিয়ান আমাদের কাছে উক্ত সনদে হাদীছ বর্ণনা করে বলেন যে, তিনি প্রথমবার দুই হাত উত্তোলন করেছেন। তাদের কেউ বলেন, মাত্র একবার।[16]
তাহক্বীক্ব : একবার হাত উত্তোলন করা যে কূফার আমল, তা সুফিয়ান ছাওরী (রহঃ)-এর বর্ণনায় ফুটে উঠেছে। যা পূর্বেও বর্ণনায় উল্লেখ করা হয়েছে। তাই ইমাম বুখারী ও ইবনু আবী হাতেম এ সংক্রান্ত বর্ণনাকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।[17] তাছাড়া কারো ব্যক্তিগত আমল শরী‘আতের দলীল হতে পারে না।
(৫) عَنِ الْبَرَاءِ بْنِ عَازِبٍ قَالَ رَأَيْتُ رَسُوْلَ اللهِ رَفَعَ يَدَيْهِ حِيْنَ افْتَتَحَ الصَّلَاةَ ثُمَّ لَمْ يَرْفَعْهُمَا حَتَّى اِنْصَرَفَ.
(৫) বারা ইবনু আযেব (রাঃ) বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-কে দেখেছি, তিনি যখন ছালাত আরম্ভ করতেন, তখন দু’হাত উত্তোলন করতেন। অতঃপর ছালাত শেষ করা পর্যন্ত তিনি আর দু’হাত উত্তোলন করতেন না।[18]
তাহক্বীক্ব : হাদীছটি যঈফ। এর সনদে ইবনু আবী লায়লা নামে যঈফ রাবী আছে। ইমাম বায়হাক্বী বলেন, তার হাদীছ দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় না।[19] তাছাড়া ইমাম আবুদাঊদ হাদীছটি উল্লেখ করে বলেন, هَذَا الْحَدِيْثُ لَيْسَ بِصَحِيْحٍ ‘এই হাদীছ ছহীহ নয়’।[20]
(৬) عَنِ اِبْنِ عُمَرَ أنَّ النَّبِىَّ كَانَ يَرْفَعُ يَدَهُ اِذَا افْتَتَحَ الصَّلَاةَ ثُمَّ لَا يَعُوْدُ.
(৬) ইবনু ওমর (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) যখন ছালাত আরম্ভ করতেন, তখন দুই হাত উত্তোলন করতেন। অতঃপর আর তুলতেন না।[21]
তাহক্বীক্ব : ইমাম বায়হাক্বী ও হাকেম বলেন, বর্ণনাটি বাতিল ও মিথ্যা।[22]
(৭) عَنْ مُجَاهِدٍ قَالَ صَلَّيْتُ خَلْفَ ابْنِ عُمَرَ فَلَمْ يَكُنْ يَرْفَعُ يَدَيْهِ إِلاَّ فِي التَّكْبِيرَةِ الْأُولَى مِنَ الصَّلَاةِ.
(৭) মুজাহিদ বলেন, আমি ইবনু ওমর (রাঃ)-এর পিছনে ছালাত আদায় করলাম। তিনি প্রথম তাকবীর ছাড়া আর রাফ‘উল ইয়াদায়েন করলেন না।[23]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি যঈফ। এর সনদে আবুবকর ইবনু আইয়াশ নামে একজন রাবী আছে। ইমাম বুখারীসহ অন্যান্য মুহাদ্দিছ তাকে ত্রুটিপূর্ণ বলেছেন।[24] আলবানী বলেন, ‘বর্ণনাটি শায। কারণ এটি অতি পরিচিত হাদীছের বিরোধী।[25]
জ্ঞাতব্য : কেউ কেউ উক্ত বর্ণনাগুলোর আলোকে বলতে চেয়েছেন, ইবনু ওমর (রাঃ) রাসূল (ছাঃ)-এর মৃত্যুর পর রাফ‘উল ইয়াদায়েন করা ছেড়ে দিয়েছিলেন।[26] কিন্তু উক্ত দাবী সঠিক নয়। কারণ অনেক ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে যে, ইবনু ওমর (রাঃ) আজীবন রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে ছালাত আদায় করেছেন। সরাসরি বুখারী ও মুসলিমে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেমন-
عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ إِذَا دَخَلَ فِي الصَّلَاةِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ وَإِذَا رَكَعَ رَفَعَ يَدَيْهِ وَإِذَا قَالَ سَمِعَ اللهُ لِمَنْ حَمِدَهُ رَفَعَ يَدَيْهِ وَإِذَا قَامَ مِنْ الرَّكْعَتَيْنِ رَفَعَ يَدَيْهِ وَرَفَعَ ذَلِكَ ابْنُ عُمَرَ إِلَى نَبِيِّ اللهِ .
নাফে‘ (রাঃ) বলেন, ইবনু ওমর (রাঃ) যখন ছালাত শুরু করতেন, তখন তাকবীর দিতেন এবং দুই হাত উত্তোলন করতেন। যখন রুকূ করতেন তখনও দুই হাত উঠাতেন, যখন ‘সামি‘আল্লাহু লিমান হামিদাহ’ বলতেন এবং যখন দুই রাক‘আতের পর দাঁড়াতেন তখনও দুই হাত উত্তোলন করতেন। ইবনু ওমর (রাঃ) এই বিষয়টিকে রাসূল (ছাঃ)-এর দিকে সম্বোধন করেছেন।[27]
عَنْ نَافِعٍ أَنَّ ابْنَ عُمَرَ كَانَ إِذَا رَأَى رَجُلًا لَا يَرْفَعُ يَدَيْهِ إِذَا رَكَعَ وَإِذَا رَفَعَ رَمَاهُ بِالْحَصَى.
নাফে‘ (রাঃ) বলেন, নিশ্চয় ইবনু ওমর (রাঃ) যখন কোন ব্যক্তিকে দেখতেন যে, সে রুকূতে যাওয়া ও উঠার সময় রাফ‘উল ইয়াদায়েন করছে না, তখন তিনি তার দিকে পাথর ছুড়ে মারতেন।[28]
সুধী পাঠক! যারা যঈফ, জাল ও মিথ্যা বর্ণনার পক্ষে উকালতি করেন, তারা এখন কী জবাব দিবেন?
(৮) عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّ رَسُوْلَ اللهِ قَالَ مَنْ رَفَعَ يَدَيْهِ فِى الصَّلَاةِ فَلَا صَلَاةَ لَهُ.
(৮) আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করে, তার ছালাত হয় না’।[29]
তাহক্বীক্ব : হাদীছটি বাতিল বা মিথ্যা।[30] মুহাম্মাদ তাহের পাট্টানী বলেন, ‘এর সনদে মামূন বিন আহমাদ আল-হারূবী রয়েছে, সে দাজ্জাল। সে হাদীছ জালকারী।[31] আবু নু‘আইম বলেন, ‘সে খাবীছ, হাদীছ জালকারী। সে ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তির নামে মিথ্যা হাদীছ রচনাকারী’।[32]
(৯) عَنْ أَبِىْ جُعْفَةَ الْقَارِىِّ أَنَّ أَبَا هُرَيْرَةَ كَانَ يُصَلِّىْ بِهِمْ فَكَبَّرَ كَمَا حَفَضَ وَرَفَعَ وَكَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ حِيْنَ يُكَبِّرُ وَيَفْتَتِحُ الصَّلاَةَ.
(৯) আবু জা‘ফর বলেন, আবু হুরায়রা আমাদের সাথে একদা ছালাত আদায় করলেন, তিনি ছালাতে উঠা-বসা করার সময় তাকবীর দিলেন। কিন্তু শুধু ছালাত শুরুর সময় হাত উঠালেন।[33]
তাহক্বীক্ব : উক্ত শব্দে বর্ণনাটি পরিচিত নয়। বরং এটি ছহীহ হাদীছের বিরোধী। কারণ প্রসিদ্ধ হাদীছের মধ্যে একবার রাফ‘উল ইয়াদায়েনের কথা নেই।[34] তাছাড়া আবু হুরায়রা (রাঃ) ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন মর্মে ছহীহ বর্ণনা এসেছে। যেমন-
عَنْ أَبِىْ هُرَيْرَةَ أَنَّهُ كاَنَ إِذَا كَبَّرَ رَفَعَ يَدَيْهِ وَإِذَا رَكَعَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوْعِ.
আবু হুরায়রা (রাঃ) যখন তাকবীর দিতেন, যখন রুকূ করতেন এবং যখন রুকূ থেকে মাথা উঠাতেন তখন রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন।[35] সুতরাং আবু হুরায়রা (রাঃ) রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন না- এমন দাবী সঠিক নয়।
(১০) عَنْ أَنَسٍ قَالَ قَالَ رَسُوْلُ اللهِ مَنْ رَفَعَ يَدَيْهِ فِى الرُّكُوْعِ فَلَا صَلَاةَ لَهُ.
(১০) আনাস (রাঃ) বলেন, রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি রুকূতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করবে, তার ছালাত হবে না।[36]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল বা মিথ্যা। ইমাম দারাকুৎনী বলেন, ‘মুহাম্মাদ ইবনু উকাশা নামক রাবী হাদীছ জালকারী’।[37] ইমাম জাওযকানী বলেন, ‘এই হাদীছ বাতিল। এর কোন ভিত্তি নেই। মামূন বিন আহমাদ দাজ্জাল, মিথ্যুক, হাদীছ জালকারী।[38]
(১১) عَنْ أَبِىْ حَنِيْفَةَ أَنَّهُ قَالَ مَنْ رَفَعَ يَدَيْهِ فِى الصَّلَاةِ فَسَدَتْ صَلَاتُهُ.
(১১) আবু হানীফা (রহঃ) বলেন, যে ব্যক্তি ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করবে, তার ছালাত নষ্ট হয়ে যাবে।[39]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি জাল বা মিথ্যা। আল্লামা মোল্লা আলী ক্বারী হানাফী (রহঃ) উক্ত বর্ণনা তার জাল হাদীছের গ্রন্থে উল্লেখ করে বলেন, ‘এই হাদীছটি মুহাম্মাদ বিন উকাশা আল-কিরমানী জাল করেছে। আল্লাহ তার উপর গযব নাযিল করুন’।[40]
(১২) قَالَ أَبُوْ حَنِيْفَةَ عَنْ حَمَّادٍ عَنْ اِبْرَاهِيْمَ عَنِ الْأسْوَدِ أنَّ عَبْدَ اللهِ ابْنَ مَسْعُوْدٍ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِىْ أَوَّلِ التَّكْبِيْرِ ثُمَّ لَايَعُوْدُ إِلَى شَيْئٍ مِّنْ ذَلِكَ وَيَأْثُرُ ذَلِكَ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ .
(১২) আবু হানীফা হাম্মাদ থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি ইবরাহীম থেকে, ইবরাহীম আসওয়াদ থেকে বর্ণনা করেন যে, আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ) প্রথম তাকবীরে হাত উত্তোলন করতেন। অতঃপর আর হাত উত্তোলন করতেন না। এটা রাসূলুল্লাহ (ছাঃ)-এরই নিয়ম।[41]
তাহক্বীক্ব : আব্দুল্লাহ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর বর্ণনা সম্পর্কে আমরা পূর্বে বিস্তারিত আলোচনা পেশ করেছি। সুতরাং এই বর্ণনা গ্রহণযোগ্য নয়। তাছাড়া এই বর্ণনা অনেক ত্রুটিপূর্ণ। কারণ ইমাম আবু হানীফা (রহঃ)-এর নামে যে সমস্ত বর্ণনা এসেছে, মুহাদ্দিছগণ সেগুলোর ব্যাপারে অনেক আপত্তি তুলেছেন।[42]
জ্ঞাতব্য : রাফ‘উল ইয়াদায়েন সম্পর্কে ইমাম আবু হানীফা ও ইমাম আওযাঈ (রহঃ)-এর মাঝে কথোপকথন হয়েছিল মর্মে একটি ঘটনা প্রচলিত আছে। এতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন না করার বিষয়কে প্রাধান্য দেয়া হয়।[43] অথচ এটা চরম মিথ্যাচার। ওবাইদুল্লাহ মুবারকপুরী (রহঃ) বলেন, وَالْقِصَّةُ مَشْهُوْرَةٌ بَيْنَ الْحَنَفِيَّةِ لَكِنْ لاَ يَشُكُّ مَنْ لَهُ أَدْنَى عَقْلٍ وَدِرَايَةٍ أَنَّهَا حِكاَيَةٌ مُخْتَلَقَةٌ وَأَكْذُوْبَةٌ مُخْتَرَعَةٌ ‘হানাফীদের মাঝে ঘটনাটি খুবই প্রসিদ্ধ। কিন্তু যার যৎ-সামান্য জ্ঞান-বুদ্ধি আছে, তার নিকট পরিষ্কার যে, এটি একটি বানোয়াট গল্প ও অভিনব মিথ্যাচার’।[44] এমনকি ‘মুসনাদুল ইমামুল আযম’ গ্রন্থে উক্ত ঘটনা উল্লেখ করা হলেও তার টীকাকার ভিত্তিহীন বলেছেন।[45]
(১৩) عَنْ عَاصِمٍ بْنِ كُلَيْبٍ عَنْ أَبِيْهِ قَالََ رَأَيْتُ عَلِىَّ ابْنَ أَبِىْ طَالِبٍ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِى التَّكْبِيْرَةِ الْأُوْلَى مِنَ الصَّلَاةِ الْمَكْتُوْبَةِ وَلَمْ يَرْفَعُهُمَا فِيْمَا سِوَى ذَلِكَ.
(১৩) আছেম ইবনু কুলাইব তার পিতা হতে বর্ণনা করেন তিনি বলেছেন, আমি আলী (রাঃ)-কে ফরয ছালাতের প্রথম তাকবীরে দুই হাত উত্তোলন করতে দেখেছি। এছাড়া তিনি অন্য কোথাও হাত তুলতেন না।[46]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি নিতান্তই দুর্বল। মুহাদ্দিছ ওছমান দারেমী বলেন, আলী (রাঃ)-এর নামে দুর্বল সূত্রে বর্ণিত হয়েছে। ইমাম বায়হাক্বী বলেন, আলী সম্পর্কে এই ধারণা সঠিক নয় যে, তিনি রাসূল (ছাঃ)-এর কর্মের উপর নিজের কর্ম প্রাধান্য দিয়েছেন। বরং এর রাবী আবুবকর নাহশালীই দুর্বল। কারণ সে এমন রাবী নয়, যার দ্বারা দলীল গ্রহণ করা যায় এবং কোন সুন্নাত সাব্যস্ত হয়। ইমাম শাফেঈ (রহঃ) বলেন, আলী, ইবনু মাস‘ঊদ এবং তাদের থেকে যারা হাদীছ বর্ণনা করেছেন, তারা ছালাতের শুরুতে ছাড়া রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন না মর্মে যে কথা বর্ণিত হয়েছে তা সঠিক নয়।[47]
(১৪) عَنْ أَبِىْ إِسْحَاقَ قَالَ كَانَ أَصْحَابُ عَبْدِ اللهِ وَأَصْحَابُ عَلِىٍّ لاَ يَرْفَعُوْنَ أَيْدِيْهِمْ إِلاَّ فِىْ افْتِتَاحِ الصَّلاَةِ قَالَ وَكِيْعٌ ثُمَّ لاَ يَعُوْدُوْنَ.
(১৪) আবু ইসহাক্ব বলেন, আব্দুল্লাহ (ইবনু মাসঊদ) ও আলী (রাঃ)-এর সাথীরা কেউই ছালাতের শুরুতে ছাড়া তাদের হাত উঠাতেন না। ওয়াকী বলেন, তারা আর হাত উঠাতেন না।[48]
তাহক্বীক্ব : উক্ত বর্ণনাও মুনকার। কারণ ইবনু মাসঊদ (রাঃ)-এর পক্ষে কিছু বর্ণনা পাওয়া গেলেও আলী (রাঃ) সম্পর্কে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করার স্পষ্ট ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।[49] সুতরাং উপরের বর্ণনা গ্রহণযোগ্য হওয়ার প্রশ্নই উঠে না।
عَنْ عَلِىِّ بْنِ أَبِىْ طَالِبٍ عَنْ رَسُوْلِ اللهِ أَنَّهُ كَانَ إِذَا قَامَ إِلَى الصَّلاَةِ الْمَكْتُوْبَةِ كَبَّرَ وَرَفَعَ يَدَيْهِ حَذْوَ مَنْكِبَيْهِ وَيَصْنَعُ مِثْلَ ذَلِكَ إِذَا قَضَى قِرَاءَتَهُ وَأَرَادَ أَنْ يَرْكَعَ وَيَصْنَعُهُ إِذَا رَفَعَ مِنَ الرُّكُوْعِ وَلاَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِى شَىْءٍ مِنْ صَلاَتِهِ وَهُوَ قَاعِدٌ وَإِذَا قَامَ مِنَ السَّجْدَتَيْنِ رَفَعَ يَدَيْهِ كَذَلِكَ وَكَبَّرَ.
আলী (রাঃ) রাসূল (ছাঃ) থেকে বর্ণনা করেন, তিনি যখন ফরয ছালাতে দাঁড়াতেন, তখন তাকবীর দিতেন এবং কাঁধ বরাবর দুই হাত উত্তোলন করতেন। যখন তিনি ক্বিরাআত শেষ করতেন ও রুকূতে যাওয়ার ইচ্ছা করতেন, তখনও তিনি অনুরূপ করতেন। যখন তিনি রুকূ থেকে উঠতেন তখনও তিনি অনুরূপ করতেন। তবে বসা অবস্থায় তিনি রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন না। কিন্তু যখন তিনি দুই রাক‘আত শেষ করে দাঁড়াতেন, তখন অনুরূপ রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন এবং তাকবীর দিতেন। [50]
সুধী পাঠক! যারা উক্ত মিথ্যা বর্ণনার পক্ষে উকালতি করেন, তারা কি আলী (রাঃ)-কে রাসূল (ছাঃ)-এর অবাধ্য প্রমাণ করতে চান?
(১৫) عَنِ الْأَسْوَدِ قَالَ رَأَيْتُ عُمَرَ بْنَ الْخَطَّابِ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِىْ أَوَّلِ تَكْبِيْرَةٍ ثُمَّ لَا يَعُوْدُ.
(১৫) আসওয়াদ (রাঃ) বলেন, আমি ওমর (রাঃ)-কে একবার দুই হাত উত্তোলন করতে দেখেছি। অতঃপর তিনি আর করতেন না।[51] উল্লেখ্য যে, উক্ত মর্মে ওমর (রাঃ)-এর নামে আরো কিছু বর্ণনা এসেছে।[52]
তাহক্বীক্ব : উক্ত বর্ণনা যঈফ। ইমাম হাকেম বলেন, ‘বর্ণনাটি অপরিচিত। এর দ্বারা দলীল সাব্যস্ত করা যাবে না’।[53] যদিও ইমাম তাহাবী তাকে বিশুদ্ধ বলতে চেয়েছেন।[54] কিন্তু ইবনুল জাওযী তার দাবীকে প্রত্যাখ্যান করেছেন।[55] মূলতঃ ওমর (রাঃ)-এর নামে এ সমস্ত বর্ণনা উল্লেখ করাই মিথ্যাচার। কারণ ওমর (রাঃ) রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন মর্মে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে।
عَنِ ابْنِ عُمَرَ أَنَّ عُمَرَ كَانَ يَرْفَعُ يَدَيْهِ فِى الرُّكُوْعِ وَعِنْدَ الرَّفْعِ مِنْهُ.
ইবনু ওমর (রাঃ) বলেন, ওমর (রাঃ) রুকূতে যাওয়ার সময় এবং রুকূ থেকে উঠার সময় রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন।[56]
(১৬) عَنِ اِبْنِ عَبَّاسٍ أَنَّهُ قَالَ الْعَشَرَةُ الَّذِيْنَ شَهِدَ لَهُمُ النَّبِىُّ الجْنَةَ مَاكَانُوْا يَرْفَعُوْنَ أَيْدِيْهِمْ إِلَّا فِىْ اِفْتِتَاحِ الصَّلَاةِ.
(১৬) ইবনু আব্বাস (রাঃ) বলেন, রাসূল (ছাঃ) যে দশজন ছাহাবীর জন্য জান্নাতের সাক্ষ্য দিয়েছেন, তারা কেউই ছালাতের শুরুতে ছাড়া রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন না।[57]
তাহকবীক্ব : বর্ণনাটি জাল। আলাউদ্দ্বীন আল-কাসানী (মৃঃ ৫৮৮) তার ‘বাদাইউছ ছানায়ে‘-এর মধ্যে উল্লেখ করেছেন। সেখান থেকে আল্লামা বদরুদ্দ্বীন আইনী ছহীহ বুখারী ও আবুদাঊদের ভাষ্যে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু কেউই কোন সূত্র উল্লেখ করেননি। মূলতঃ উক্ত বর্ণনা বানোয়াট ও ভিত্তিহীন। ড. তাক্বিউদ্দ্বীন বলেন, وَلاَ عِبْرَةَ بِهَذَا الْأَثَرِ مَا لَمْ يُوْجَدْ سَنَدُهُ عِنْدَ مَهْرَةِ الْفَنِّ مَعَ ثُبُوْتِ خِلاَفِهِ فِىْ كُتُبِ الْحَدِيْثِ ‘এই সনদে কোন উপদেশ নেই। কারণ এ বিষয়ে যারা বিশেষজ্ঞ তাদের নিকটেই এর সনদে কোন অস্তিত্ব পাওয়া যায়নি। তাছাড়াও হাদীছের গ্রন্থ সমূহে এর বিরোধী দলীলই বিদ্যমান’।[58] কারণ ইবনু আব্বাস (রাঃ) নিজে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন মর্মে ছহীহ হাদীছ বর্ণিত হয়েছে। যেমন-
عَنْ أَبِىْ حَمْزَةَ مَوْلَى بَنِىْ أَسَدٍ قَالَ رَأَيْتُ ابْنَ عَبَّاسٍ يَرْفَعُ يَدَيْهِ إِذَا افْتَتَحَ الصَّلاَةَ وَإِذَا رَكَعَ وَإِذَا رَفَعَ رَأْسَهُ مِنَ الرُّكُوْعِ.
বনী আসাদের গোলাম আবু হামযাহ বলেন, আমি ইবনু আব্বাস (রাঃ)-কে দেখেছি, তিনি যখন ছালাত শুরু করতেন, যখন রুকূ করতেন এবং যখন রুকূ থেকে মাথা উঠাতেন তখন রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন।[59]
عَنْ عَطَاءٍ قَالَ رَأَيْتُ أَبَا سَعِيْدٍ الْخُدْرِيَّ وَابْنَ عُمَرَ وَابْنَ عَبَّاسٍ وَابْنَ الزُّبَيْرِ يَرْفَعُوْنَ أَيْدِيَهُمْ.
আত্বা (রাঃ) বলেন, আমি আবু সাঈদ খুদরী, ইবনু ওমর, ইবনু আব্বাস ও ইবনু যুবাইর (রাঃ)-কে দেখেছি, তারা সকলেই ছালাতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতেন।[60]
(17) عَنِ ابْنِ عَبَّاسٍ رَضِي اللهُ تَعَالَى عَنْهُمَا عَنِ النَّبِيِّ قَالَ لا تُرْفَعُ الأَيْدِىْ إِلاَّ فِىْ سَبْعِ مَوَاطِنَ حِيْنَ يَفْتَتِحُ الصَّلاةَ وَحِيْنَ يَدْخُلُ الْمَسْجِدَ الْحَرَامَ فَيَنْظُرُ إِلَى الْبَيْتِ وَحِيْنَ يَقُوْمُ عَلَى الصَّفَا وَحِيْنَ يَقُوْمُ عَلَى الْمَرْوَةِ وَحِيْنَ يَقِفُ مَعَ النَّاسِ عَشِيَّةَ عَرَفَةَ وبِجَمْعٍ وَالْمَقامَيْنِ حِيْنَ يَرْمِى الْجَمْرَةَ.
(১৭) ইবনু আব্বাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, নবী (ছাঃ) বলেন, সাতটি স্থান ব্যতীত হাত উত্তোলন করা যাবে না। যখন ছালাত শুরু করবে, যখন মসজিদে হারামে প্রবেশ করে কা‘বা ঘর দেখবে, যখন ছাফা ও মারওয়া পাহাড়ে উঠবে, যখন আরাফার ময়দানে সকলে একত্রে অবস্থান করবে এবং যখন পাথর মারবে তখন দুই স্থানে হাত উত্তোলন করবে।[61]
তাহক্বীক্ব : বর্ণনাটি মিথ্যা ও বাতিল।[62] এমনকি ‘হেদায়ার’ ভাষ্যকার ইবনুল হুমামও তার বিরোধিতা করেছেন। যেমন-
لَمْ يَسْمَعِ الْحَكَمُ عَنْ مَقْسَمٍ إِلاَّ أَرْبَعَةَ أَحَادِيْثَ لَيْسَ هَذَا مِنْهَا فَهُوَ مُرْسَلٌ وَغَيْرُ مَحْفُوْظٍ قَالَ وَأَيْضًا فَهُمْ يَعْنِي أَصْحَابَنَا خَالَفُوْا هَذَا الْحَدِيْثَ فِىْ تَكْبِيْرَاتِ الْعِيْدَيْنِ وَتَكْبِيْرَةِ الْقُنُوْتِ.
‘হাকাম মাক্বসাম থেকে মাত্র চারটি হাদীছ শুনেছে। সেগুলোর মধ্যেও এটি নেই। সুতরাং তা মুরসাল ও অরক্ষিত। তাছাড়া আমাদের মাযহাবের লোকেরা ঈদ ও জানাযার তাকবীরের ব্যাপারে বিরোধীতা করেছে।[63] দুঃখজনক হল, উক্ত বাতিল বর্ণনার আলোকেই ‘হেদায়া’ কিতাবে রাফ‘উল ইয়াদায়েন করতে নিষেধ করে বলা হয়েছে যে,وَلَا يَرْفَعُ يَدَيْهِ إلَّا فِي التَّكْبِيْرَةِ الْأُولَى ‘প্রথম তাকবীর ছাড়া আর হাত উঠাবে না’। উক্ত বর্ণনাটি যাচাই না করেই ‘হেদায়া’ গ্রন্থকার রাফ‘উল ইয়াদায়েনের বিরুদ্ধে উক্ত বর্ণনা পেশ করেছেন।[64]
সুধী পাঠক! জাল ও যঈফ হাদীছ পেশ করে যদি সুন্নাতের উপর আমল করতে বাধা প্রদান করা হয়, তবে মানুষ কিভাবে হাদীছের দিকে ফিরে আসবে? পরবর্তীতে মাওলানা আশরাফ আলী থানবী (রহঃ) যে উদারতা প্রদর্শন করেছেন তাও ‘হেদায়া’ সংকলক দেখাতে পারেননি। মাওলানা রাফ‘উল ইয়াদায়েনের পক্ষে লিখেছেন, ‘রুকু করার নিয়মঃ রাসূলুল্লাহ (ছ) কেরাআত শেষে সামান্য কিছুক্ষণ বিরতি দিয়ে তার পর তাকবীরে তাহরীমার সময়ের মত উভয় হাত তুলে তাকবীর বলতেন এবং রুকুতে যেতেন’।[65]
[1]. আবুদাঊদ হা/৭৪৮, ১/১০৯ পৃঃ; তিরমিযী হা/২৫৭, ১ম খন্ড, পৃঃ ৫৯; নাসাঈ হা/১০২৬, ১ম খন্ড, পৃঃ ১১৭; বায়হাক্বী ২/৭৮। [2]. হাফেয আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আল-কূফী, আল-মুছান্নাফ ফিল আহাদীছ ওয়াল আছার (বৈরুত : দারুল ফিকর, ১৯৮৯/১৪০৯), হা/২৪৫৮, ১/২৬৭। [3]. নাছিরুদ্দীন আলবানী, তাহক্বীক্ব আবুদাঊদ (রিয়ায : মাকতাবাতুল মা‘আরিফ, তাবি.), হা/৭৪৮, পৃঃ ১৬১। [4]. তিরমিযী হা/২৫৬, ১/৫৯ পৃঃ-এর পর্যালোচনা দ্রঃ। [5]. নায়লুল আওত্বার ৩/১৪ পৃঃ; ফিক্বহুস সুন্নাহ ১/১০৮। [6]. শায়খ আবুল হুসাইন ওবায়দুল্লাহ মুবারকপুরী, মির‘আতুল মাফাতীহ শরহে মিশকাতুল মাফাতীহ (বেনারস : ইদারাতুল বুহূছ আল-ইসলামিয়াহ, ১৯৯৫/১৪১৫), ৩/৮৪ পৃঃ। [7]. الرفع عند الركوع والرفع منه ورد فيه أحاديث كثيرة جدا عنه صلى الله عليه وسلم بل هي متواترة عند العلماء بل ثبت الرفع عنه صلى الله عليه وسلم مع كل تكبيرة في أحاديث كثيرة ولم يصح الترك عنه صلى الله عليه وسلم إلا من طريق ابن مسعود رضي الله عنه فلا ينبغي العمل به لأنه ناف وقد تقرر عند الحنفية وغيرهم أن المثبت مقدم على النافي هذا إذا كان المثبت واحدا فكيف إذا كانوا جماعة كما في هذه المسأل؟ -সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৬৮-এর আলোচনা দ্রঃ। [8]. দারাকুৎনী ১/২৯৫; বায়হাক্বী কুবরা হা/২৬৩৬, ২/৭৯ ও ৮০; তানক্বীহ, পৃঃ ২৮১। [9]. মুসনাদে আবী ইয়ালী হা/৫০৩৯, ৮/৪৫৩। [10]. تَفَرَّدَ بِهِ مُحَمَّدُ بْنُ جَابِرٍ وَكَانَ ضَعِيْفًا عَنْ حَمَّادٍ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ وَغَيْرُ حَمَّادٍ يَرْوِيْهِ عَنْ إِبْرَاهِيْمَ مُرْسَلاً -বায়হাক্বী হা/২৬৩৬-এর মন্তব্য দ্রঃ; দারাকুৎনী হা/১১৪৪। [11]. আবুদাঊদ হা/৭৪৯, ১/১০৯ পৃঃ; ত্বাহাবী হা/১২৪৫, ‘ছালাত’ অধ্যায়, ‘রুকূর জন্য তাকবীর’ অনুচ্ছেদ ; দারাকুৎনী ১/২৯৩; বায়হাক্বী ২/৭৬। [12]. আবুদাঊদ হা/৭৫০, ১/১০৯ পৃঃ; সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৪৩। [13]. যঈফ আবুদাঊদ হা/৭৪৯- هذا حديث واهٍ قد كان يزيد بن أبي زياد يحدث به بُرْهة من دهره فلا يذكر فيه ثم لا يعود فلما لقنوه تلقن فكان يذكرها وقد اتفق الحفاظ على أنها مدرجة في الحديث। [14]. وقال أبو عمر تفرد به يزيد ورواه عنه الحفاظ فلم يذكر واحد منهم قوله ثم لا يعود - উমদাতুল ক্বারী ৯/৫ পৃঃ। [15]. বিস্তারিত দ্রঃ উমদাতুল ক্বারী, ৯/৫ পৃঃ, ‘আযান’ অধ্যায়, ‘ছালাতের শুরুতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ অনুচ্ছেদ। [16]. আবুদাঊদ ১/১০৯ পৃঃ, হা/৭৫১। [17]. هَذَا خَطَأٌ يُقَالُ وَهَمَ فِيهِ الثَّوْرِيُّ فَقَدْ رَوَاهُ جَمَاعَةٌ عَنْ عَاصِمٍ، وَقَالُوا كُلُّهُمْ أَنَّ النَّبِيَّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ افْتَتَحَ فَرَفَعَ يَدَيْهِ...فَالْبُخَارِيُّ وَأَبُو حَاتِمٍ جَعَلَا الْوَهْمَ فِيهِ مِنْ سُفْيَانَ -নাছবুর রাইয়াহ ১/৩৯৬ পৃঃ; ছহীহ আবুদাঊদ হা/৭৩৩-এর আলোচনা দ্রঃ। [18]. আবুদাঊদ, ১/১১০ পৃঃ, হা/৭৫২। [19]. বায়হাক্বী, সুনানুল কুবরা হা/২৬৩২-مُحَمَّدُ بْنُ عَبْدِ الرَّحْمَنِ بْنِ أَبِى لَيْلَى لاَ يُحْتَجُّ بِحَدِيْثِهِ وَهُوَ أَسْوَأُ حَالاً عِنْدَ أَهْلِ الْمَعْرِفَةِ بِالْحَدِيْثِ مِنْ يَزِيْدَ بْنِ أَبِى زِيَادٍ। [20]. যঈফ আবুদাঊদ ১/১১০, হা/৭৫২। [21]. বায়হাক্বী, সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৪৩; তানযীমুল আশতাত ১/২৯২, দ্রঃ জরুরী মাসায়েল, পৃঃ ১১। [22]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৪৩। [23]. ত্বাহাবী হা/১৩৫৭, ১/১৩৩ পৃঃ; ছহীহ বুখারীর হাশিয়া দ্রঃ ১/১০২। [24]. বায়হাক্বী, মা‘রেফাতুস সুনান হা/৮৩৭-এর বিশ্লেষণ দ্রঃ وقد تكلم في حديث أبي بكر بن عياش محمد بن إسماعيل البخاري وغيره من الحفاظ। [25]. সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৪৩-এর আলোচনা দ্রঃ- فهو شاذ أيضا للخلاف المعروف في أبي بكر بن عياش। [26]. ত্বাহাবী হা/১৩৫৭-এর আলোচনা দ্রঃ। [27]. بَاب رَفْعِ الْيَدَيْنِ إِذَا قَامَ مِنْ الرَّكْعَتَيْنِ -ছহীহ বুখারী হা/৭৩৯, ১ম খন্ড, পৃঃ ১০২, (ইফাবা হা/৭০৩, ২/১০১ পৃঃ); মিশকাত হা/৭৯৪ ও ৭৯৫; বঙ্গানুবাদ মিশকাত হা/৭৩৮ ও ৭৩৯, ২য় খন্ড, পৃঃ ২৫৩। [28]. ইমাম বুখারী, রাফ‘উল ইয়াদায়েন হা/১৪, পৃঃ ১৫; সনদ ছহীহ; সিলসিলা যঈফাহ হা/৯৪৩-এর আলোচনা দ্রঃ; বায়হাক্বী, মা‘রেফাতুস সুনান হা/৮৩৯। [29]. ইবনু হিববান, আল-মাজরূহীন ৩/৪৬; তানক্বীহ, পৃঃ ২৮২। [30]. ইবনুল জাওযী, আল-মাওযূ‘আত ২/৯৬; ইমাম শাওকানী, আল-আবাতিল ২/১২; সিলসিলা যঈফাহ হা/৫৬৮। [31]. فيه مأمون بن أحمد الهروى دجال يضع الحديث-তাযকিরাতুল মাওযূ‘আত, পৃঃ ৮৭। [32]. خبيث وضاع يأتى عن الثقات بالموضوعات -সিলসিলা যঈফাহ ২/৪১। [33]. মুওয়াত্ত্বা মুহাম্মাদ হা/১০৪; মাযহাব বিরোধীদের স্বরূপ সন্ধানে, পৃঃ ২৮১; শরহে বুখারী ২/৩৫৫ পৃঃ। [34]. দেখুন : ছহীহ বুখারী হা/৭৮৫, ১/১০৮ পৃঃ, (ইফাবা হা/৭৪৯, ২/১২৩ পৃঃ), ‘আযান’ অধ্যায়; মুসলিম হা/৮৯৩ ও ৮৯৪।- عَنْ أَبِى هُرَيْرَةَ أَنَّهُ كَانَ يُصَلِّى بِهِمْ فَيُكَبِّرُ كُلَّمَا خَفَضَ وَرَفَعَ فَإِذَا انْصَرَفَ قَالَ إِنِّى لأَشْبَهُكُمْ صَلاَةً بِرَسُولِ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ [35]. বুখারী, রাফ‘উল ইয়াদায়েন হা/১৭, পৃঃ ১৮। [36]. আবু আব্দুল্লাহ আল-হাকিম, আল-মাদখাল, পৃঃ ১০১। [37]. محمد بن عكاشة يضع الحديث -তানকীহুল কালাম, পৃঃ ২৮৩। [38].هَذَا حَدِيْثٌ بَاطِلٌ لاَ أَصْلَ لَهُ وَالْمَأْمُوْنُ بْنُ أَحْمَدَ هَذَا كَانَ دَجَّاٌل مِنَ الدَّجَاجَةِ كَذَّابًا وَضَّاعًا -তানক্বীহ, পৃঃ ২৮২। [39]. সিলসিলা যঈফাহ, ২/৪১। [40]. هَذَا الْحَدِيْثَ وَضَعَهُ مُحَمَّدُ بْنُ عُكَاشَةَ الْكِرْمَانِىُّ قَبَّحَهُ اللهُ -ঐ, আল-আসরারুল মারফূ‘আহ ফিল আহাদীছিল মাওযূ‘আহ, পৃঃ ৮১;সিলসিলা যঈফাহ ২/৪১ পৃঃ। [41]. মুসনাদে ইমাম আযম হা/৮০১, ২/৫০১; মাযহাব বিরোধীদের স্বরূপ সন্ধানে, পৃঃ ২৭৮। [42]. বিস্তারিত দ্রঃ ইরওয়াউল গালীল ২/২৭৮ পৃঃ। [43]. ফাৎহুল ক্বাদীর ১/৩১১ পৃঃ; মিরক্বাতুল মাফাতীহ ৩/৩০২ পৃঃ; বুখারী ১/১০২ পৃঃ, টীকা দ্রঃ; মাযহাব বিরোধীদের স্বরূপ সন্ধানে পৃঃ ২৮৫। [44]. মির‘আতুল মাফাতীহ শরহে মিশকাতুল মাছাবীহ ৩/৭১ পৃঃ। [45]. মুসনাদুল ইমামুল আযম, ১ম খন্ড, পৃঃ ৪৮৪, হা/৭৭৮। [46]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২৪৫৭; ত্বাহাবী হা/১৩৫৩; মুওয়াত্ত্বা মালেক হা/১০৫; জরুরী মাসায়েল, পৃঃ ১১; নবীজীর নামায, পৃঃ ১৮৪; মাযহাব বিরোধীদের স্বরূপ সন্ধানে, পৃঃ ২৮১। [47]. قَالَ عُثْمَانُ الدَّارِمِىُّ فَهَذَا قَدْ رُوِىَ مِنْ هَذَا الطَّرِيقِ الْوَاهِى عَنْ عَلِىٍّ... فَلَيْسَ الظَّنُّ بِعَلِىٍّ رَضِىَ اللهُ عَنْهُ أَنَّهُ يَخْتَارُ فِعْلَهُ عَلَى فِعْلِ النَّبِىِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ ... وَلَكِنْ لَيْسَ أَبُو بَكْرٍ النَّهْشَلِىُّ مِمَّنْ يُحْتَجُّ بِرِوَايَتِهِ أَوْ تَثْبُتُ بِهِ سُنَّةٌ لَمْ يَأْتِ بِهَا غَيْرُهُ... قَالَ الشَّافِعِىُّ- وَلاَ يَثْبُتُ عَنْ عَلِىٍّ وَابْنِ مَسْعُودٍ يَعْنِى مَا رَوَوْهُ عَنْهُمَا مِنْ أَنَّهُمَا كَانَا لاَ يَرْفَعَانِ أَيْدِيَهُمَا فِى شَىْءٍ مِنَ الصَّلاَةِ إِلاَّ فِى تَكْبِيرَةِ الاِفْتِتَاحِ. -বায়হাক্বী, আন-সুনানুল কুবরা আল-জাওহারুন নাক্বী সহ হা/২৬৩৭, ২/৮০ পৃঃ। [48]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ, হা/২৪৬১, ১/২৬৭। [49]. ছহীহ আবুদাঊদ হা/৭৪৪; বায়হাক্বী, আন-সুনানুল কুবরা আল-জাওহারুন নাক্বী সহ হা/২৬৩৭, ২/৮০ পৃঃ; ১০ নং হাদীছের আলোচনা দ্রঃ। [50]. ছহীহ আবুদাঊদ হা/৭৪৪, ১/১০৯ পৃঃ। [51]. ত্বাহাবী হা/১৩৬৪, ১/১৩৩ পৃঃ; নবীজীর স. নামায, পৃঃ ১৮৪; মাযহাব বিরোধীদের স্বরূপ সন্ধানে, পৃঃ ২৮০। [52]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বা হা/২৪৫৪, ১/২১৪ পৃঃ। [53]. هَذِهِ رِوَايَةٌ شَاذَّةٌ لَا يَقُوْمُ بِهَا حُجَّةٌ -তুহফাতুল আহওয়াযী ২/৯৫ পৃঃ। [54]. ত্বাহাবী হা/১৩৬৪, ১/১৩৩ পৃঃ। [55]. আল-বাদরুল মুনীর ৩/৫০১ পৃঃ- هَذَا الْأَثر عَن عمر لَا يَصِحُّ عَنهُ وَفِي ذَلِك رد عَلَى تَصْحِيْحِ الطَّحَاوِيّ لَهُ। [56]. বায়হাক্বী, মা‘আরিফুস সুনান ২/৪৭০; সনদ ছহীহ, তুহফাতুল আহওয়াযী ২/৯৫ পৃঃ। [57]. উমদাতুল ক্বারী, ৯/৫ পৃঃ, ‘আযান’ অধ্যায়, ‘ছালাতের শুরুতে রাফ‘উল ইয়াদায়েন’ অনুচ্ছেদ; জরুরী মাসায়েল, পৃঃ ১১। [58]. মুওয়াত্ত্ব মালেক, তাহক্বীক্ব, পৃঃ ১৭৯। [59]. মুছান্নাফ আব্দুর রাযযাক হা/২৫২৩; মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২৪৪৬, সনদ ছহীহ, সিলসিলা যঈফাহ হা/৬০৪৪-এর আলোচনা দ্রঃ। [60]. মুছান্নাফ ইবনে আবী শায়বাহ হা/২৪৪৫; মুছান্নাফ আব্দুর রাযয

Wednesday, September 9, 2015

মোজার উপর মাসাহ করা

 দুই মোজার উপর মাসাহ করা হাদীস দ্বারা বৈধ, এমন সব অপবিত্রতা হতে যা ওযু ওয়াজিব করে। যখন পবিত্র অবস্থায় মোজাদ্বয় পরিধান করে এরপর অপবিত্র হয়। অতঃপর যদি সে মুকীম হয়; তবে একদিন একরাত মাসাহ করবে। আর মুসাফির হলে তিনদিন তিনরাত মাসাহ করবে। মাসাহের মুদ্দত শুরু হবে ওযুবিহীন হওয়ার পর থেকে। হাতের আঙুলসমূহ দ্বারা উভয় মোজার পৃষ্টদেশে রেকাকৃতি করে মাসাহ করা। পায়ের আঙুলসমূহ হতে শুরু করে নালার দিকে টেনে আনবে। এ মাসাহের ফরয হল হাতের তিন আঙুল পরিমাণ। আর এমন মোজার উপর মাসাহ করা জায়েয নেয়, যাতে ছেঁড়া এত বেশি যে, পায়ের তিন আঙুল পরিমাণ প্রকাশ পায়। আর ছেঁড়া যদি এর চেয়ে কম, তবে মাসাহ জায়েয হবে।
যে ব্যক্তির জন্য গোসল ফরয হয়েছে তার জন্য মোজার ওপর মাসাহ জায়েয নেই। যেসব বিষয় ওযুকে ভঙ্গ করে দেয় তা মাসাহকে ভঙ্গ করে দেয়। এমনিভাবে মোজা খুলেফেলা এবং মাসাহের মুদ্দাত শেষ হয়ে যাওয়াও মাসাহকে নষ্ট করে দেয়। অতঃপর যদি মাসাহের মুদ্দাত শেষ হয়ে যায়, (আর ওযু ঠিক থাকে) তবে মোজাদ্বয় খুলে পদদ্বয় ধুয়ে নেবে এবং সালাত পড়ে নেবে। আর ওযুর অবশিষ্ট অঙ্গগুলোকে দ্বিতীয়বার ধৌত করতে হবে না। যে ব্যক্তি মুকীম অবস্থায় মাসাহ শুরু করল এরপর একদিন একরাত পূর্ণ হওয়ার পূর্বে সফরে গেল, তখন সে পূর্ণ তিনদিন তিনরাত মাসাহ করবে। আর যে ব্যক্তি মুসাফির অবস্থায় মাসাহ শুরু করল, তারপর মুকীম হয়ে গেল, তাহলে সে যদি একদিন একরাত বা ততোধিক সময় মাসাহ করে থাকে, তবে তার উপর আবশ্যক হবে মজাদ্বয় খুলেফেলা। আর যদি এর চেয়ে কম সময় মাসাহ করে থাকে, তবে একদিন একরাত পরিপূর্ণ করবে।

প্রশ্ন:এক খতীব সাহেবকে জুমআর বয়ানে বলতে শুনেছি যে, মোজার উপর মাসেহ বৈধ হওয়ার জন্য তা চামড়ার হওয়া জরুরি নয়। বরং আমাদের দেশে প্রচলিত সব ধরনের মোজার উপর মাসেহ করা জায়েয। চাই তা সুতার হোক বা পশমের হোক বা অন্য কোনো কিছুর হোক। জানতে চাই, তার এ কথা কতটুকু সঠিক?
উত্তর:খতীব সাহেবের ঐ কথা ঠিক নয়। চামড়ার মোজার উপর মাসেহ জায়েয আছে। কিন্তু চামড়া ছাড়া সুতা বা পশমের তৈরি যেসব মোজা সচরাচর পাওয়া যায় এর উপর মাসেহ সহীহ নয়। তবে সুতা বা পশমের মোজায় নিম্নোক্ত শর্তগুলো পাওয়া গেলে তার উপর মাসেহ জায়েয হবে। শর্তগুলো হচ্ছে :
ক) মোজা এমন মোটা ও পুরু হওয়া যে, জুতা ছাড়া শুধু মোজা পায়ে দিয়ে তিন মাইল পর্যন্ত হাঁটা যায়। এতে মোজা ফেটে যায় না এবং নষ্টও হয় না। খ) পায়ের সাথে কোনো জিনিস দ্বারা বাঁধা ছাড়াই তা লেগে থাকে এবং তা পরিধান করে হাঁটা যায়। 
গ) মোজা এমন মোটা যে, তা পানি চোষে না এবং তা ভেদ করে পানি পা পর্যন্ত পৌঁছায় না।
ঘ) তা পরিধান করার পর মোজার উপর থেকে ভিতরের অংশ দেখা যায় না। সচরাচর ব্যবহৃত সুতা বা পশমের মোজায় যেহেতু এসব শর্ত পাওয়া যায় না তাই এর উপর মাসেহ জায়েয হবে না।
জামে তিরমিযী ১/১৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৮৩; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮২; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৬৯; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৪৩-৩৪৪; ফাতহুল কাদীর ১/১৩৮; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ১২০; মাজমাউল আনহুর ১/৭৫; আননাহরুল ফায়েক ১/১২৩


Wednesday, July 29, 2015

ছালাত পরবর্তী দুয়া ও যিকর সমূহ

ছালাত পরবর্তী দুয়া ও যিকর সমূহ
আসসালামু আলাইকুম ওয়া রাহামাতুল্লাহ।
আমাদের সমাজে দেখা যায়ফরজ নামায হয়ে গেলে ইমাম-মুক্তাদীগণ সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করে থাকেন।  অথবা শুরু হয় বেদাআতী পদ্ধতি সম্মিলিত জিকির। অথচ রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে সকল দুয়া ও জিকির নিয়মিত পাঠ করতেন সেগুলোর কোন গুরুত্ব নাই। ইমাম সাহেব নিজেও এসব দুয়া ও জিকিরগুলো পাঠ করেন না, মুসল্লীদেরকেও শেখান না বা পড়তে উৎসাহিত করেন না।  তাইতো বলা হয়, সুন্নত যেখান থেকে উঠে যায় বেদআত সেখানে জায়গা দখল করে। আর আমাদের সমাজে এটাই হয়েছে। আল্লাহ যেন আমাদেরকে বিদআত বর্জন করে সুন্নত অনুসরণ করার তাওফীক দান করেন। আমীন।
সহীহ সুন্নাহ থেকে ফরজ সালাত সমাপান্তে ইমাম-মুক্তাদী সবার জন্য পঠিতব্য দুয়া ও জিকির সমূহ উপস্থাপন করা হল:
(1) اَللهُ أَكْبَرُ، أَسْتَغْفِرُ اللهَ، اَسْتَغْفِرُ اللهَ، اَسْتَغْفِرُ اللهَ-
উচ্চারণ : ১. আল্লা-হু আকবার (একবার সরবে)। আসতাগফিরুল্লাহ, আসতাগফিরুল্লাহ, আস্তাগফিরুল্লাহ (তিনবার)।
অর্থ : আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি।[173]
(2) اَللَّهُمَّ أَنْتَ السَّلاَمُ وَمِنْكَ السَّلاَمُ، تَبَارَكْتَ يَا ذَا الْجَلاَلِ وَ الْإِكْرَامِ.
২. আল্লা-হুম্মা আন্তাস্ সালা-মু ওয়া মিন্কাস্ সালা-মু, তাবা-রক্তা ইয়া যাল জালা-লি ওয়াল ইকরাম।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনিই শান্তি, আপনার থেকেই আসে শান্তি। বরকতময় আপনি, হে মর্যাদা ও সম্মানের মালিকএটুকু পড়েই ইমাম উঠে যেতে পারেন। [174]
এই সময় তিনি তাঁর স্থান থেকে একটু সরে গিয়ে সুন্নাত পড়বেন, যাতে দুই স্থানের মাটি ক্বিয়ামতের দিন তার ইবাদতের সাক্ষ্য দেয়। যেমন আল্লাহ বলেন, يَوْمَئِذٍ تُحَدِّثُ أَخْبَارَهَا ক্বিয়ামতের দিন মাটি তার সকল বৃত্তান্ত বর্ণনা করবে।[175]
(3) لآ إِلَهَ إِلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَهُوَ عَلَى كُلِّ شَيْءٍ قَدِيْرٌ، لاَحَوْلَ وَلاَ قُوَّةَ إلاَّ بِاللهِ- اَللَّهُمَّ أَعِنِّيْ عَلَى ذِكْرِكَ وَ شُكْرِكَ وَ حُسْنِ عِبَادَتِكَ، اَللَّهُمَّ لاَ مَانِعَ لِمَا أَعْطَيْتَ وَلاَ مُعْطِيَ لِمَا مَنَعْتَ وَلاَ يَنْفَعُ ذَا الْجَدِّ مِنْكَ الْجَدُّ-
৩. লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা শারীকা লাহূ, লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হাম্দু ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন ক্বাদীর; লা হাওলা ওয়ালা কুউওয়াতা ইল্লা বিল্লা-হ (উঁচুস্বরে)।[176] আল্লা-হুম্মা আইন্নী আলা যিকরিকা ওয়া শুক্রিকা ওয়া হুসনে ইবা-দাতিকা। আল্লা-হুম্মা লা মা-নেআ লেমা আত্বায়তা অলা মুত্বিয়া লেমা মানাতা অলা ইয়ান্ফাউ যাল জাদ্দে মিন্কাল জাদ্দু।
অর্থ : নেই কোন উপাস্য আল্লাহ ব্যতীত, যিনি একক ও শরীকবিহীন। তাঁরই জন্য সকল রাজত্ব ও তাঁরই জন্য যাবতীয় প্রশংসা। তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী। নেই কোন ক্ষমতা, নেই কোন শক্তি, আল্লাহ ব্যতীত।[177] হে আল্লাহ! আপনাকে স্মরণ করার জন্য, আপনার শুকরিয়া আদায় করার জন্য এবং আপনার সুন্দর ইবাদত করার জন্য আমাকে সাহায্য করুন।[178] হে আল্লাহ! আপনি যা দিতে চান, তা রোধ করার কেউ নেই এবং আপনি যা রোধ করেন, তা দেওয়ার কেউ নেই। কোন সম্পদশালী ব্যক্তির সম্পদ কোন উপকার করতে পারে না আপনার রহমত ব্যতীত। [179]
(4) رَضِيتُ بِاللَّهِ رَبًّا وَّبِالْإِسْلاَمِ دِيْنًا وَّبِمُحَمَّدٍ نَبِيًّا-
৪. রাযীতু বিললা-হে রববাঁও ওয়া বিল ইসলা-মে দীনাঁও ওয়া বিমুহাম্মাদিন্ নাবিইয়া।
অর্থ: আমি সন্তুষ্ট হয়ে গেলাম আল্লাহর উপরে প্রতিপালক হিসাবে, ইসলামের উপরে দ্বীন হিসাবে এবং মুহাম্মাদের উপরে নবী হিসাবে। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি এই দোআ পাঠ করবে, তার জন্য জান্নাত ওয়াজিব হয়ে যাবে।[180]
(5) اَللَّهُمَّ إِنِّىْ أَعُوْذُبِكَ مِنَ الْجُبْنِ وَأَعُوْذُبِكَ مِنْ الْبُخْلِ وَأَعُوْذُبِكَ مِنْ أَرْذَلِ الْعُمُرِ وَأَعُوْذُبِكَ مِنْ فِتْنَةِ الدُّنْيَا وَ عَذَابِ الْقَبْرِ-
৫. আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল জুব্নে ওয়া আঊযুবিকা মিনাল বুখ্লে ওয়া আঊযুবিকা মিন আরযালিল উমুরে; ওয়া আঊযুবিকা মিন্ ফিৎনাতিদ দুন্ইয়া ওয়া আযা-বিল ক্বাবরে।
অর্থঃ হে আল্লাহ! (১) আমি আপনার নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করছি ভীরুতা হতে (২) আশ্রয় প্রার্থনা করছি কৃপণতা হতে (৩) আশ্রয় প্রার্থনা করছি নিকৃষ্টতম বয়স হতে এবং (৪) আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুনিয়ার ফিৎনা হতে ও (৫) কবরের আযাব হতে।[181]
(6) اَللَّهُمَّ إِنِّي أَعُوْذُ بِكَ مِنَ الْهَمِّ وَالْحَزَنِ وَالْعَجْزِ وَالْكَسَلِ وَالْجُبْنِ وَالْبُخْلِ وَضَلَعِ الدَّيْنِ وَغَلَبَةِ الرِّجَالِ
৬. আল্লা-হুম্মা ইন্নী আঊযুবিকা মিনাল হাম্মে ওয়াল হাযানে ওয়াল আজঝে ওয়াল কাসালে ওয়াল জুবনে ওয়াল বুখলে ওয়া যালাইদ দায়নে ওয়া গালাবাতির রিজা-লে।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি আপনার নিকটে আশ্রয় প্রার্থনা করছি দুশ্চিন্তা ও দুঃখ-বেদনা হতে, অক্ষমতা ও অলসতা হতে, ভীরুতা ও কৃপণতা হতে এবং ঋণের বোঝা ও মানুষের যবরদস্তি হতে।[182]
(7) سُبْحَانَ اللهِ وَ بِحَمْدِهِ عَدَدَ خَلْقِهِ وَ رِضَا نَفْسِهِ وَ زِنَةَ عَرْشِهِ وَ مِدَادَ كَلِمَاتِهِ-
৭. সুবহা-নাল্লা-হে ওয়া বেহাম্দিহী আদাদা খাল্ক্বিহী ওয়া রিযা নাফ্সিহী ওয়া ঝিনাতা আরশিহী ওয়া মিদা-দা কালেমা-তিহ (৩ বার)।
অর্থ : মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য। তাঁর সৃষ্টিকুলের সংখ্যার সমপরিমাণ, তাঁর সত্তার সন্তুষ্টির সমপরিমাণ এবং তাঁর আরশের ওযন ও মহিমাময় বাক্য সমূহের ব্যাপ্তি সমপরিমাণ।[183]
(8) يَا مُقَلِّبَ الْقُلُوْبِ ثَبِّتْ قَلْبِي عَلَى دِيْنِكَ، اَللَّهُمَّ مُصَرِّفَ الْقُلُوْبِ صَرِّفْ قُلُوْبَنَا عَلَى طَاعَتِكَ-
৮. ইয়া মুক্বাল্লিবাল ক্বুলূবে ছাবিবত ক্বালবী আলা দ্বীনিকা, আল্লা-হুম্মা মুছারিরফাল কবুলূবে ছাররিফ ক্বুলূবানা আলা ত্বোয়া-আতিকা।
অর্থ : হে হৃদয় সমূহের পরিবর্তনকারী! আমার হৃদয়কে তোমার দ্বীনের উপর দৃঢ় রাখোহে অন্তর সমূহের রূপান্তরকারী! আমাদের অন্তর সমূহকে তোমার আনুগত্যের দিকে ফিরিয়ে দাও।[184]
(9) اَللَّهُمَّ أَدْخِلْنِىْ الْجَنَّةَ وَ أَجِرْنِىْ مِنَ النَّارِ-
৯. আল্লা-হুম্মা আদখিলনিল জান্নাতা ওয়া আজিরনী মিনান্ না-র (৩ বার)।
অর্থ : হে আল্লাহ তুমি আমাকে জান্নাতে প্রবেশ করাও এবং জাহান্নাম থেকে পানাহ দাও! [185]
(10) اَللَّهُمَّ إِنِّي أَسْأَلُكَ الْهُدَى وَالتُّقَى وَالْعَفَافَ وَالْغِنَى-
১০. আল্লা-হুম্মা ইন্নী আসআলুকাল হুদা ওয়াত তুক্বা ওয়াল আফা-ফা ওয়াল গিণা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আমি তোমার নিকটে সুপথের নির্দেশনা, পরহেযগারিতা, পবিত্রতা ও সচ্ছলতা প্রার্থনা করছি।[186]
(11) سُبْحَانَ اللهِ، اَلْحَمْدُ ِللهِ، اَللهُ أَكْبَرُ، لآ إلهَ إلاَّ اللهُ وَحْدَهُ لاَ شَرِيْكَ لَهُ، لَهُ الْمُلْكُ وَ لَهُ الْحَمْدُ وَ هُوَ عَلَى كُلِّ شَيْئٍ قَدِيْرٌ-
১১. সুবহা-নাল্লা-হ (৩৩ বার)। আলহাম্দুলিল্লা-হ (৩৩ বার)। আল্লাহু-আকবার (৩৩ বার)। লা ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্দাহূ লা শারীকা লাহূ; লাহুল মুল্কু ওয়া লাহুল হাম্দু ওয়া হুয়া আলা কুল্লে শাইয়িন ক্বাদীর (১ বার)। অথবা আল্লা-হু আকবার (৩৪ বার)।
অর্থ : পবিত্রতাময় আল্লাহ। যাবতীয় প্রশংসা আল্লাহর জন্য। আল্লাহ সবার চেয়ে বড়। নেই কোন উপাস্য একক আল্লাহ ব্যতীত; তাঁর কোন শরীক নেই। তাঁরই জন্য সমস্ত রাজত্ব ও তাঁরই জন্য যাবতীয় প্রশংসা। তিনি সকল কিছুর উপরে ক্ষমতাশালী।[187]
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, যে ব্যক্তি প্রত্যেক ফরয ছালাতের পর উক্ত দোআ পাঠ করবে, তার সকল গোনাহ মাফ করা হবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়। [188] অন্য বর্ণনায় এসেছে, তিনি আয়েশা ও ফাতেমা (রাঃ)-কে বলেন, তোমরা এ দোআটি প্রত্যেক ছালাতের শেষে এবং শয়নকালে পড়বে। এটাই তোমাদের জন্য একজন খাদেমের চাইতে উত্তম হবে।[189]
(12) سُبْحَانَ اللهِ وَ بِحَمْدِهِ ، سُبْحَانَ اللهِ الْعَظِيْمِ-
১২. সুব্হা-নাল্লা-হি ওয়া বিহাম্দিহী, সুব্হা-নাল্লা-হিল আযীম। অথবা সকালে ও সন্ধ্যায় ১০০ বার করে সুবহা-নাল্লা-হে ওয়া বেহামদিহী পড়বে।
অর্থ : মহাপবিত্র আল্লাহ এবং সকল প্রশংসা তাঁর জন্য। মহাপবিত্র আল্লাহ, যিনি মহান। এই দোআ পাঠের ফলে তার সকল গোনাহ ঝরে যাবে। যদিও তা সাগরের ফেনা সমতুল্য হয়। রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এই দোআ সম্পর্কে বলেন যে, দুটি কালেমা রয়েছে, যা রহমানের নিকটে খুবই প্রিয়, যবানে বলতে খুবই হালকা এবং মীযানের পাল্লায় খুবই ভারী। তা হল সুব্হা-নাল্লা-হি.।[190] ইমাম বুখারী (রহঃ) তাঁর জগদ্বিখ্যাত কিতাব ছহীহুল বুখারী উপরোক্ত হাদীছ ও দোআর মাধ্যমে শেষ করেছেন।
(13) اَللهُ لآ إِلهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ، لاَ تَأْخُذُهُ سِنَةٌ وَّلاَ نَوْمٌ، لَهُ مَا فِى السَّمَاوَاتِ وَمَا فِى الْأَرْضِ، مَنْ ذَا الَّذِىْ يَشْفَعُ عِنْدَهُ إِلاَّ بِإِذْنِهِ، يَعْلَمُ مَا بَيْنَ أَيْدِيْهِمْ وَمَا خَلْفَهُمْ وَلاَ يُحِيْطُوْنَ بِشَيْئٍ مِّنْ عِلْمِهِ إِلاَّ بِمَا شَآءَ، وَسِعَ كُرْسِيُّهُ السَّمَاوَاتِ وَالْأَرْضَ، وَلاَ يَئُودُهُ حِفْظُهُمَا وَ هُوَ الْعَلِيُّ الْعَظِيْمُ-
১৩. আয়াতুল কুরসী : আল্লা-হু লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূম। লা তাখুযুহু সেনাতুঁ ওয়ালা নাঊম। লাহূ মা ফিস্ সামা-ওয়াতে ওয়ামা ফিল আরয। মান যাল্লাযী ইয়াশফাইন্দাহূ ইল্লা বিইয্নিহি। ইয়ালামু মা বায়না আয়দীহিম ওয়ামা খালফাহুম, ওয়ালা ইউহীতূনা বিশাইয়িম্ মিন ইল্মিহী ইল্লা বিমা শা-আ; ওয়াসেআ কুরসিইয়ুহুস্ সামা-ওয়া-তে ওয়াল আরয; ওয়ালা ইয়াউদুহূ হিফযুহুমা ওয়া হুওয়াল আলিইয়ুল আযীম (বাক্বারাহ ২/২৫৫)।
অর্থ : আল্লাহ, যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। কোন তন্দ্রা বা নিদ্রা তাঁকে পাকড়াও করতে পারে না। আসমান ও যমীনে যা কিছু আছে সবকিছু তাঁরই মালিকানাধীন। তাঁর হুকুম ব্যতীত এমন কে আছে যে তাঁর নিকটে সুফারিশ করতে পারে? তাদের সম্মুখে ও পিছনে যা কিছু আছে সবকিছুই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসমুদ্র হতে তারা কিছুই আয়ত্ত করতে পারে না, কেবল যতুটুকু তিনি দিতে ইচ্ছা করেন। তাঁর কুরসী[191] সমগ্র আসমান ও যমীন পরিবেষ্টন করে আছে। আর সেগুলির তত্ত্বাবধান তাঁকে মোটেই শ্রান্ত করে না। তিনি সর্বোচ্চ ও মহান
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, প্রত্যেক ফরয ছালাত শেষে আয়াতুল কুরসী পাঠকারীর জান্নাতে প্রবেশ করার জন্য আর কোন বাধা থাকে না মৃত্যু ব্যতীত (নাসাঈ)। শয়নকালে পাঠ করলে সকাল পর্যন্ত তার হেফাযতের জন্য একজন ফেরেশতা পাহারায় নিযু্ক্ত থাকে। যাতে শয়তান তার নিকটবর্তী হতে না পারে (বুখারী)। [192]
(14) اَللَّهُمَّ اكْفِنِيْ بِحَلاَلِكَ عَنْ حَرَامِكَ وَ أَغْنِنِىْ بِفَضْلِكَ عَمَّنْ سِوَاكَ-
১৪. আল্লা-হুম্মাক্ফিনী বেহালা-লেকা আন হারা-মেকা ওয়া আগ্নিনী বেফায্লেকা আম্মান সেওয়া-কা।
অর্থ : হে আল্লাহ! আপনি আমাকে হারাম ছাড়া হালাল দ্বারা যথেষ্ট করুন এবং আপনার অনুগ্রহ দ্বারা আমাকে অন্যদের থেকে মুখাপেক্ষীহীন করুন! রাসূল (ছাঃ) বলেন, এই দোআর ফলে পাহাড় পরিমাণ ঋণ থাকলেও আল্লাহ তার ঋণ মুক্তির ব্যবস্থা করে দেন।[193]
(15) أَسْتَغْفِرُ اللهَ الَّذِىْ لآ إِلَهَ إِلاَّ هُوَ الْحَىُّ الْقَيُّوْمُ وَ أَتُوْبُ إِلَيْهِ-
১৫. আস্তাগফিরুল্লা-হাল্লাযী লা ইলা-হা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল ক্বাইয়ূমু ওয়া আতূবু ইলাইহে
অর্থ : আমি আল্লাহর নিকটে ক্ষমা প্রার্থনা করছি। যিনি ব্যতীত কোন উপাস্য নেই। যিনি চিরঞ্জীব ও বিশ্বচরাচরের ধারক। আমি অনুতপ্ত হৃদয়ে তাঁর দিকে ফিরে যাচ্ছি বা তওবা করছি। এই দোআ পড়লে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন, যদিও সে জিহাদের ময়দান থেকে পলাতক আসামী হয়।[194] রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) দৈনিক ১০০ করে বার তওবা করতেন।[195]
১৬. রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) প্রত্যেক ছালাতের শেষে সূরা ফালাক্ব নাস পড়ার নির্দেশ দিতেন।[196] তিনি প্রতি রাতে শুতে যাওয়ার সময় সূরা ইখলাছ, ফালাক্ব ও নাস পড়ে দুহাতে ফুঁক দিয়ে মাথা ও চেহারাসহ সাধ্যপক্ষে সমস্ত শরীরে হাত বুলাতেন। তিনি এটি তিনবার করতেন। [197]
_________________________________________________________________________
Reference……….
[173] . মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/৯৫৯, ৯৬১ ছালাত পরবর্তী যিকর অনুচ্ছেদ-১৮।
[174] . মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬০। উল্লেখ্য যে, শায়খ জাযারী বলেন, এই সাথে ইলায়কা ইয়ারজিউস সালাম, হাইয়েনা রববানা বিস সালা-ম, ওয়া আদখিলনা দা-রাকা দা-রাস সালাম…’-বৃদ্ধি করার কোন ভিত্তি নেই। এটি কোন গল্পকারের সৃষ্টি। -মিশকাত আলবানী হা/৯৬১-এর টীকা দ্র:।
[175] . যিলযাল ৯৯/৪; নায়ল ৪/১০৯-১০ পৃঃ।
[176] . সালাম ফিরানোর পরে রাসূল (ছাঃ) এটুকু তাঁর সর্বোচ্চ স্বরে পড়তেন। মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৩।
[177] . মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৩, ছালাত অধ্যায়-৪, ছালাতের পর যিকর অনুচ্ছেদ-১৮।
[178] . আহমাদ, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৯৪৯।
[179] . মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/৯৬২।
[180] . আবুদাঊদ হা/১৫২৯, ছালাত অধ্যায়-২, ক্ষমা প্রার্থনা অনুচ্ছেদ-৩৬১।
[181] . বুখারী, মিশকাত হা/৯৬৪।
[182] . মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২৪৫৮ দোআ সমূহ অধ্যায়-৯, আশ্রয় প্রার্থনা অনুচ্ছেদ-৮।
[183] . মুসলিম, মিশকাত হা/২৩০১ দোআ সমূহ অধ্যায়, তাসবীহ ও হামদ পাঠের ছওয়াব অনুচ্ছেদ-৩; আবুদাঊদ হা/১৫০৩।
[184] . তিরমিযী, ইবনু মাজাহ, মিশকাত হা/১০২ ঈমান অধ্যায়-১, তাক্বদীরের প্রতি বিশ্বাস অনুচ্ছেদ-৩; মুসলিম, মিশকাত হা/৮৯।
[185] . তিরমিযী, নাসাঈ, মিশকাত হা/২৪৭৮ দোআ সমূহ অধ্যায়-৯, আশ্রয় প্রার্থনা অনুচ্ছেদ-৮।
[186] . মুসলিম, মিশকাত হা/২৪৮৪ দোআ সমূহ অধ্যায়-৯, সারগর্ভ দো অনুচ্ছেদ-৯।
[187] . মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৬, ৯৬৭, ছালাত অধ্যায়-৪, ছালাত পরবর্তী যিকর অনুচ্ছেদ-১৮।
[188] . মুসলিম, মিশকাত হা/৯৬৭।
[189] . মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মুসলিম, মিশকাত হা/২৩৮৭-৮৮ দোআ সমূহ অধ্যায়-৯, সকালে, সন্ধ্যায় ও শয়নকালে কি দোআ পড়তে হয় অনুচ্ছেদ- ৬।
[190] . মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২২৯৬-৯৮, দোআ সমূহ অধ্যায়-৯, তাসবীহ, তাহমীদ, তাহলীল ও তাকবীর পাঠের ছওয়াব অনুচ্ছেদ-৩; বুখারী হা/৭৫৬৩ তাওহীদ অধ্যায়, অনুচ্ছেদ-৫৮।
[191] . ইবনু কাছীর বলেন, সঠিক কথা এই যে, কুরসী ও আরশ পৃথক বস্ত্ত এবং আরশ কুরসী হতে বড়, বিভিন্ন হাদীছ ও আছার থেকে যা প্রমাণিত হয় (, তাফসীর)। যেমন রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেন, কুরসীর তুলনায় সপ্ত আকাশ ও পৃথিবী ময়দানে পড়ে থাকা একটি ছোট লোহার বেড়ীর ন্যায়। আরশের তুলনায় কুরসী একই রূপ ছোট হিসাবে গণ্য। ইবনু কাছীর, তাফসীর বাক্বারাহ ২/২৫৫; সিলসিলা ছহীহাহ হা/১০৯।
[192] . নাসাঈ কুবরা হা/৯৯২৮, সিলসিলা ছহীহাহ হা/৯৭২; মিশকাত হা/৯৭৪, ছালাত অধ্যায়-৪, অনুচ্ছেদ-১৮; মুসলিম, বুখারী, মিশকাত হা/২১২২-২৩ কুরআনের ফাযায়েল অধ্যায়-৮।
[193] . তিরমিযী, বায়হাক্বী (দাওয়াতুল কাবীর), মিশকাত হা/২৪৪৯, দোআ সমূহ অধ্যায়-৯, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন দো অনুচ্ছেদ-৭ ; ছহীহাহ হা/২৬৬।
[194] . তিরমিযী, আবুদাঊদ, মিশকাত হা/২৩৫৩ দোআসমূহ অধ্যায়-৯, ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা করা অনুচ্ছেদ-৪; সিলসিলা ছহীহাহ হা/২৭২৭।
[195] . মুসলিম, মিশকাত হা/২৩২৫ ক্ষমা প্রার্থনা ও তওবা করা অনুচ্ছেদ-৪।
[196] . আহমাদ, আবুদাঊদ, নাসাঈ, মিশকাত হা/৯৬৯, ছালাত অধ্যায়-৪, ছালাত পরবর্তী যিকর অনুচ্ছেদ-১৮।
[197] . মুত্তাফাক্ব আলাইহ, মিশকাত হা/২১৩২ কুরআনের ফাযায়েল অধ্যায়-৮।
(সংকলিত)