Wednesday, September 9, 2015

মোজার উপর মাসাহ করা

 দুই মোজার উপর মাসাহ করা হাদীস দ্বারা বৈধ, এমন সব অপবিত্রতা হতে যা ওযু ওয়াজিব করে। যখন পবিত্র অবস্থায় মোজাদ্বয় পরিধান করে এরপর অপবিত্র হয়। অতঃপর যদি সে মুকীম হয়; তবে একদিন একরাত মাসাহ করবে। আর মুসাফির হলে তিনদিন তিনরাত মাসাহ করবে। মাসাহের মুদ্দত শুরু হবে ওযুবিহীন হওয়ার পর থেকে। হাতের আঙুলসমূহ দ্বারা উভয় মোজার পৃষ্টদেশে রেকাকৃতি করে মাসাহ করা। পায়ের আঙুলসমূহ হতে শুরু করে নালার দিকে টেনে আনবে। এ মাসাহের ফরয হল হাতের তিন আঙুল পরিমাণ। আর এমন মোজার উপর মাসাহ করা জায়েয নেয়, যাতে ছেঁড়া এত বেশি যে, পায়ের তিন আঙুল পরিমাণ প্রকাশ পায়। আর ছেঁড়া যদি এর চেয়ে কম, তবে মাসাহ জায়েয হবে।
যে ব্যক্তির জন্য গোসল ফরয হয়েছে তার জন্য মোজার ওপর মাসাহ জায়েয নেই। যেসব বিষয় ওযুকে ভঙ্গ করে দেয় তা মাসাহকে ভঙ্গ করে দেয়। এমনিভাবে মোজা খুলেফেলা এবং মাসাহের মুদ্দাত শেষ হয়ে যাওয়াও মাসাহকে নষ্ট করে দেয়। অতঃপর যদি মাসাহের মুদ্দাত শেষ হয়ে যায়, (আর ওযু ঠিক থাকে) তবে মোজাদ্বয় খুলে পদদ্বয় ধুয়ে নেবে এবং সালাত পড়ে নেবে। আর ওযুর অবশিষ্ট অঙ্গগুলোকে দ্বিতীয়বার ধৌত করতে হবে না। যে ব্যক্তি মুকীম অবস্থায় মাসাহ শুরু করল এরপর একদিন একরাত পূর্ণ হওয়ার পূর্বে সফরে গেল, তখন সে পূর্ণ তিনদিন তিনরাত মাসাহ করবে। আর যে ব্যক্তি মুসাফির অবস্থায় মাসাহ শুরু করল, তারপর মুকীম হয়ে গেল, তাহলে সে যদি একদিন একরাত বা ততোধিক সময় মাসাহ করে থাকে, তবে তার উপর আবশ্যক হবে মজাদ্বয় খুলেফেলা। আর যদি এর চেয়ে কম সময় মাসাহ করে থাকে, তবে একদিন একরাত পরিপূর্ণ করবে।

প্রশ্ন:এক খতীব সাহেবকে জুমআর বয়ানে বলতে শুনেছি যে, মোজার উপর মাসেহ বৈধ হওয়ার জন্য তা চামড়ার হওয়া জরুরি নয়। বরং আমাদের দেশে প্রচলিত সব ধরনের মোজার উপর মাসেহ করা জায়েয। চাই তা সুতার হোক বা পশমের হোক বা অন্য কোনো কিছুর হোক। জানতে চাই, তার এ কথা কতটুকু সঠিক?
উত্তর:খতীব সাহেবের ঐ কথা ঠিক নয়। চামড়ার মোজার উপর মাসেহ জায়েয আছে। কিন্তু চামড়া ছাড়া সুতা বা পশমের তৈরি যেসব মোজা সচরাচর পাওয়া যায় এর উপর মাসেহ সহীহ নয়। তবে সুতা বা পশমের মোজায় নিম্নোক্ত শর্তগুলো পাওয়া গেলে তার উপর মাসেহ জায়েয হবে। শর্তগুলো হচ্ছে :
ক) মোজা এমন মোটা ও পুরু হওয়া যে, জুতা ছাড়া শুধু মোজা পায়ে দিয়ে তিন মাইল পর্যন্ত হাঁটা যায়। এতে মোজা ফেটে যায় না এবং নষ্টও হয় না। খ) পায়ের সাথে কোনো জিনিস দ্বারা বাঁধা ছাড়াই তা লেগে থাকে এবং তা পরিধান করে হাঁটা যায়। 
গ) মোজা এমন মোটা যে, তা পানি চোষে না এবং তা ভেদ করে পানি পা পর্যন্ত পৌঁছায় না।
ঘ) তা পরিধান করার পর মোজার উপর থেকে ভিতরের অংশ দেখা যায় না। সচরাচর ব্যবহৃত সুতা বা পশমের মোজায় যেহেতু এসব শর্ত পাওয়া যায় না তাই এর উপর মাসেহ জায়েয হবে না।
জামে তিরমিযী ১/১৫; বাদায়েউস সানায়ে ১/৮৩; আলবাহরুর রায়েক ১/১৮২; আদ্দুররুল মুখতার ১/২৬৯; আলমুহীতুল বুরহানী ১/৩৪৩-৩৪৪; ফাতহুল কাদীর ১/১৩৮; শরহুল মুনইয়াহ পৃ. ১২০; মাজমাউল আনহুর ১/৭৫; আননাহরুল ফায়েক ১/১২৩


No comments: