Thursday, September 22, 2016

আউওয়াবিন নামাজ

আউওয়াবিন নামাজ

‘আউওয়াবিন’ আরবি শব্দ। এটি বহুবচন; অর্থ হলো প্রত্যাবর্তনকারীরা। কর্মবাচ্য বা কর্মকারক ও সম্বন্ধ পদ হিসেবে হয় ‘আওয়াবিন’, কর্তাবাচক ও কর্তৃকারক হিসেবে মূল রূপ হলো ‘আউওয়াবুন’। এর একবচন হলো আউওয়াব, যার মানে হলো প্রত্যাবর্তনকারী। যিনি আল্লাহর দিকে বেশি বেশি ফিরে আসেন, গুনাহ থেকে বেশি পরিমাণে তওবা করেন। ‘আউওয়াব’ শব্দটি পবিত্র কোরআনে চারবার এসেছে। ‘আউওয়াব’ শব্দের আরেকটি অর্থ হলো ‘অত্যধিক অনুগত’, যিনি একান্তে গোপনে নির্জনে নিজের পাপ স্মরণ করে তার জন্য তওবা করে আনুগত্য ও ইবাদতের মাধ্যমে আল্লাহর দিকে ফিরে যান। ‘আউওয়াব’ শব্দটি ‘মুসাব্বিহ’ বা তাসবিহ পাঠকারী তথা পবিত্রতা বর্ণনাকারী অর্থেও ব্যবহৃত হয়। কখনো এটি ‘দৃঢ় সংকল্প’ ও ‘অবিচল’ অর্থে ব্যবহার হয়ে থাকে। আবার ‘সন্ধ্যা সমীরণ’ অর্থেও এর ব্যবহার রয়েছে। আরবদের মধ্যে ‘আবাতিশ শামস’ কথাটি ‘গাবাতিশ শামস’ অর্থে ব্যবহৃত হয়; ‘গারাবাতিশ শামস’ মানে সূর্য অস্তমিত হলো বা সূর্য অস্ত গেল।
শরিয়তের পরিভাষায় ‘আউওয়াবিন নামাজ’ হলো মাগরিবের নামাজর পর এশার নামাজের আগে আদায় করা নামাজ। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ছয় রাকাত নামাজ আদায় করবে; এসবের মাঝে কোনো মন্দ কথা না বলে, তার এই নামাজ ১২ বছরের ইবাদতের সমতুল্য গণ্য হবে। রাসুলুল্লাহ (সা.) আরও বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের নামাজের পর ২০ রাকাত নামাজ আদায় করবে, আল্লাহ তাআলা তার জন্য জান্নাতে একটি প্রাসাদ নির্মাণ করবেন। (তিরমিজি, মিশকাত; ১০৩-১০৪; ফয়জুল কালাম, পৃষ্ঠা: ৩২০-৩২১, হাদিস: ৪৪৯-৪৫০)।
‘রাসুলুল্লাহ (সা.) মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়তেন এবং তিনি বলেছেন, যে ব্যক্তি মাগরিবের পর ছয় রাকাত নামাজ পড়বে, তার সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে; যদি তা সমুদ্রের ফেনার সমপরিমাণও হয়।’ হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) এই নামাজকে আউওয়াবিন নামে অভিহিত করেছেন। ইমাম তীবি (রা.)-এর মতে, মাগরিবের দুই রাকাত সুন্নতও এই ছয় রাকাতের অন্তর্ভুক্ত। অবশিষ্ট রাকাতগুলো এক নিয়তে দুই বা চার রাকাত করে পড়া যায়। মাগরিবের পর সর্বোচ্চ ২০ রাকাত ও সর্বনিম্ন দুই রাকাত পড়ার কথা বর্ণিত আছে; চার রাকাত এবং ছয় রাকাতের বর্ণনাও পাওয়া যায়। যার পক্ষে যখন যা সম্ভব, তিনি তা-ই পড়বেন।

No comments: