মুনাজাত কিভাবে করতে হয়?
‘মুনাজাত’ শব্দের অর্থ হচ্ছে কারো সাথে চুপিচুপি বা গোপনে কথা বলা। মুনাজাত করার নিয়মঃ
(১) যেকোন সময় মুনাজাত করা যায়, দিনে রাতে, দাঁড়ানো অবস্থায়, শুয়ে-বসে, ওযু ছাড়া বা ওযু করে, এমনকি গোসল ফরয এমন অবস্থায়, অথবা নারীদের ঋতু অবস্থাতেও মুনাজাত বা দুয়া করতে পারবেন। তবে ফরয সালাতের পরপরই হাত দুই তুলে মুনাজাত করবেন না। মসজিদে ফরয সালাতের পরে সম্মিলিতভাবে যেই মুনাজাত পড়ানো হয়, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম এইভাবে সম্মিলিত মুনাজাত কোনদিন করেননি, বরং এটা একটা বিদআ’ত। সেইজন্য পাঁচ ওয়াক্ত ফরয সালাতের সালাম ফেরানোর পরে কিছু ‘সুন্নতী’ যিকির আযকার আছে, প্রথমে সেই যিকির ও দুয়াগুলো করে এর পরে ইচ্ছা হলে ‘একাকী’ হাত তুলে মুনাজাত করতে পারেন। অথবা ফরয, সুন্নত সব সালাত শেষ করে এরপরে মুনাজাত করবেন। উত্তম হচ্ছে সালাতের পরে নয়, বরং সালাতের ভেতরেই বিভিন্ন স্থানে (যেমন সিজদাতে, দুই সিজদার মাঝখানে, দুয়া মাসুরাসহ এমন সাতটি জায়গা আছে সালাতের ভেতরে, যেখানে দুয়া করা যায়), সেই জায়গাগুলোতে দুয়া করা। কারণ সালাতের ভেতরের দুয়াগুলো বেশি কবুল হয় ও আল্লাহ পছন্দ করেন। আল্লাহ বলেন, “তোমরা ধৈর্য ও সালাতের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করো।” সুরা আল-বাক্বারাহ।
উল্লেখ্য, অনেকে মনে করেন সালাতের পরে মুনাজাত করতেই হবে। এটা ঠিক নয়, সালাতের পরে আপনার ইচ্ছা হলে মুনাজাত করবেন, ইচ্ছা না হলে করবেন না, এটা আপনার ব্যক্তিগত ইচ্ছা। মুনাজাত করা সালাতের কোন অংশ নয়। সালাম ফেরানোর মাধ্যমেই আপনার সালাত শেষ হয়ে যায়।
.
(২) ওযু অবস্থায় পশ্চিম দিকে ফিরে দুয়া করা মুস্তাহাব বা উত্তম। তবে এটা ফরয কিংবা জরুরী নয়। ওযু ছাড়াও এবং পূর্ব-পশ্চিম, উত্তর-দক্ষিণ, যেকোন দিকে ফিরেও মুনাজাত করা যায়।
.
(৩) মুনাজাতের সময় দুই হাত তোলা মুস্তাহাব। আল্লাহ এটা পছন্দ করেন যে তাঁর বান্দা-বান্দীরা ভিক্ষুকের মতো তাঁর সুমহান দরবারে অত্যন্ত বিনীতভাবে কাকুতি-মিনতি সহকারে দুই হাত তুলে আন্তরিকভাবে দুয়া করবে। এইভাবে দুয়া করলে আল্লাহ খুশি হন এবং সেই দুয়া কবুল করেন। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের রব লজ্জাশীল ও দানশীল। তাঁর বান্দা যখন তাঁর নিকট দুই হাত তুলে প্রার্থনা করে, তখন তিনি তাদেরকে খালি হাতে ফিরিয়ে দিতে লজ্জাবোধ করেন।” তিরমিযী, আবু দাউদ, বুলুগুল মারামঃ ১৫৮১।
.
(৪) মুনাজাতের সময় হাত তোলার নিয়মঃ আল্লামাহ বাকর বিন আবু যাইদ রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “মুনাজাতকারী তার দুই হাত বাহু বরাবর বা তার কাছাকাছি এমনভাবে উঠাবে যেন তার দুই হাত মিলিত অবস্থায় থাকে, দুই হাতের মাঝখানে কোন ফাঁক না থাকে। হাতের তালু আকাশের দিকে থাকে এবং হাতের পিঠ যমীনের দিকে। চাইলে উভয় তালু চেহারার সম্মুখে রাখবে এবং হাতের পৃষ্ঠদেশ কিবলামুখী করবে এবং দুই হাত যেন পাক-সাফ থাকে, খোলা থাকে কোনো কিছু দ্বারা আবৃত না থাকে।” তাসবীহুদ-দুয়াঃ ১১৫-১১৬, ফাতহুল বারীঃ ২/৫১৭-৫১৮, শারহুল আযকারঃ ৭/২৪৭।
.
(৫) মুনাজাত করতে হবে বিনীত ভাবে, নীচু স্বরে, মনে এই দৃঢ় আশা ও প্রত্যয় নিয়ে যে,
- আল্লাহ সব কিছু শুনেন, তিনি বান্দার দুয়া শ্রবণ করেন
- আল্লাহ সমস্ত বিষয়ের উপরে ক্ষমতাবান এবং তিনি যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। সুতরাং আমি যেই দুয়া করিনা কেনো, আল্লাহ ইচ্ছা করলে তা-ই কবুল করতে সক্ষম।
- আল্লাহ মুমিনদের প্রতি অত্যন্ত দয়ালু ও ক্ষমাশীল। এমনকি তিনি তাঁর বান্দাদেরকে দুয়া করতে আদেশ করেছেন এবং দুয়া করলে তিনি কবুল করবেন বলে অগ্রিম ঘোষণা দিয়েছেন। মহান আল্লাহ বলেন, “আর তোমাদের প্রতিপালক বলেন, তোমরা আমার কাছে দুয়া করো, আমি তোমাদের দুয়া কবুল করবো।” (সুরা আল-মুমিনঃ ৬০)।
সুতরাং, মহান আল্লাহ আমার দুয়া কবুল করবেন।
“আমি এতো পাপী – আল্লাহ আমার দুয়া করবেন কিনা? আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন, নাকি করবেন না? মনে এইরকম কোন সন্দেহ নিয়ে অথবা আল্লাহ আমার দুয়া কবুল করবেন না, আমাকে মাফ করবেন না” – আল্লাহ সম্পর্কে এমন খারাপ ধারণা নিয়ে দুয়া করলে আল্লাহ সেই দুয়া সত্যিই কবুল করেন না। বান্দা যতই পাপী বা অন্যায়কারী হোক না কেনো, সে আন্তরিকভাবে তোওবা করে জান্নাতের আশা রেখেই দুয়া করবে। বিপদ যত বড়ই হোক না কেনো, আল্লাহ সব ইচ্ছা পূরণ করতে পারেন, এই আশা নিয়েই দুয়া করবে। আর যেই দুয়া করা হচ্ছে সেইদিকে মনোযোগ দিয়ে, বুঝে শুনে আল্লাহর কাছে চাইতে হবে। উদাসীন হয়ে বা অন্তর থেকে না চেয়ে শুধুমাত্র মুখে তোতাপাখির মতো উচ্চারণ করে দুয়া করলে, বা আন্তরিক দুয়া না করে লোক দেখানো দুয়া করলে, আল্লাহ সেই দুয়া কবুল করেন না। মনে আশা ও ভয় নিয়ে মনোযোগীতার সহিত কান্নাকাটি করে দুয়া করলে আল্লাহ অত্যন্ত খুশী হন এবং বান্দার দুয়া কবুল করেন।
.
(৬) মুনাজাতের প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে শুরু করা উচিত। আল্লাহর প্রশংসা এভাবে করা যেতে পারেঃ
التَّحِيَّاتُ لِلَّهِ، وَالصَّلَواتُ، وَالطَّيِّباتُ،
উচ্চারণঃ আত্তাহি’য়্যা-তু লিল্লা-হি ওয়াস-সালাওয়া-তু ওয়াত্তয়্যিবা-ত।
অর্থঃ সমস্ত অভিবাদন, সকল সালাত ও পবিত্র কাজ শুধুমাত্র আল্লাহর জন্য।
অথবা, এটা বলেও আল্লাহর প্রশংসা করা যাবে,
الْحَمْدُ لِلَّهِ حَمْدًا كَثِيرًا طَيِّبًا مُبَارَكًا فِيهِ
উচ্চারণঃ আলহা’মদুলিল্লাহি হা’মদান কাসীরান ত্বায়্যিবান মুবা-রাকান ফীহ।
অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য, যে প্রশংসা পবিত্রতা ও বরকতপূর্ণ।
অথবা এটা বলে আল্লাহর প্রশংসা করা যাবে – الْحَمْدُ لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ
উচ্চারণঃ আলহা’মদু লিল্লাহি রাব্বিল আ’লামিন।
অর্থঃ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর জন্য যিনি জগতসমূহের প্রতিপালক।
এভাবে এক বা একাধিক আল্লাহর জন্য প্রশংসামূলক বাক্য দ্বারা মুনাজাত শুরু করা উত্তম।
.
(৭) আল্লাহর প্রশংসার পরে রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দুরুদ ও শান্তির জন্য দুয়া পড়তে হবে। সহীহ হাদীসে বর্ণিত ছোট-বড় যেকোন দুরুদ পড়া যাবে, আপনার যেটা ভালো লাগে সেটা পড়বেন। সর্বোত্তম দুরুদ হচ্ছে দুরুদে ইব্রাহীম, যেটা আমরা সালাতে পড়ি। এটা না পড়ে ছোট অন্য দুরুদও পড়া যাবে। যেমন-
اللَّهُمَّ صَلِّ وَسَلِّمْ عَلَى نَبَيِّنَا مُحَمَّدٍ
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মা সল্লি ওয়া সাল্লিম আ’লা নাবিয়্যিনা মুহা’ম্মাদ।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাদের নবী মুহাম্মাদের উপর সালাত ও সালাম বর্ষণ করুন। সহীহুত তারগীব ওয়াত তারহীবঃ ১/২৭৩।
একদিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম দেখলেন, এক ব্যক্তি দুয়া করছে কিন্তু সে দুয়াতে আল্লাহর প্রশংসা ও রাসুলের প্রতি দরূদ পাঠ করেনি। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে লক্ষ্য করে বললেন, “সে তাড়াহুড়ো করেছে।” অতঃপর সে আবার প্রার্থনা করল। রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম তাকে অথবা অন্য কাউকে বললেন, “যখন তোমাদের কেউ দুয়া করে তখন সে যেন প্রথমে আল্লাহ তাআ’লার প্রশংসা ও গুণগান দিয়ে দুয়া শুরু করে। অতঃপর রাসুলের প্রতি দুরুদ পাঠ করে। এরপর তার যা ইচ্ছা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে।” আবু দাউদঃ ১৪৮১, তিরমিজীঃ ৩৪৭৭, শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ।
.
(৮) এরপর নিজের পছন্দমতো নিজের জন্য ও অন্যের জন্য, দুনিয়া বা আখেরাতের যেকোন কল্যাণের জন্য দুয়া করতে হবে। প্রথমে নিজের গুনাহ মাফের জন্য, নিজের দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণের জন্য দুয়া করতে হবে। এরপর নিজের বাবা-মা, নিজ পরিবার, আত্মীয়-স্বজন ও অন্য মুসলমান পুরুষ ও নারীদের জন্য দুয়া করা ভালো। সবচাইতে কম কথায় সবচাইতে বেশি প্রার্থনা করার এই দুয়াটা রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম খুব বেশি বেশি করতেন। “নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর অধিকাংশ দুয়া হতঃ
رَبَّنَآ اٰتِنَا فِي الدُّنْيَا حَسَنَةً وَّفِي الْاٰخِرَةِ حَسَـنَةً وَّقِنَا عَذَابَ النَّارِ
উচ্চারণঃ রব্বানা আ-তিনা ফিদ্দুনিয়া হা’সানাতাওঁ-ওয়াফিল আ-খিরাতি হাসানাতাওঁ ওয়া-ক্বিনা আ’যাবান-নার।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আমাদেরকে দুনিয়ার জীবনে কল্যাণ দাও এবং পরকালের জীবনেও কল্যাণ দান করো। আর আমাদেরকে জাহান্নামের আযাব থেকে বাঁচাও।
বিঃদ্রঃ এই দুয়াটা “আল্লাহুম্মা আতিনা...” বা “রাব্বানা আতিনা...”, এই দুইভাবেই পড়া যায়।
এছাড়া নিজের জীবিত/মৃত পিতা-মাতার জন্য এই দুয়া সর্বদা বেশি করে পড়তে হবেঃ
رَّبِّ ارْحَمْهُمَا كَمَا رَبَّيَانِي صَغِيرًا
উচ্চারণঃ রব্বির হা’ম-হুমা কামা রাব্বা ইয়ানি সগিরা।
অর্থঃ হে আল্লাহ! তুমি আমার পিতা-মাতার প্রতি তেমনি দয়া করো, যেইরকম দয়া তারা আমাকে শিশু অবস্থায় করেছিল।
.
(৯) আরবী বা বাংলায় যেকোন ভাষাতেই মুনাজাত করা যায়, আল্লাহ সকল ভাষাই বোঝেন। তবে সালাতের ভেতরে উত্তম হচ্ছে ক্বুরআন ও হাদীসের দুয়াগুলো আরবীতে মুখস্থ করে সেইগুলো দিয়েই দুয়া করা। যেমন রিযক বা টাকা-পয়সা, রোগ থেকে মুক্তি বা সুস্থতা এমন অনেকগুলোর জন্য এই দুয়াটি দুই সিজদার মাঝখানে, সিজদাতে সিজদার তাসবীহ পড়ার পরে বা দুয়া মাসুরা হিসেবে পড়লেই হবে,
اللَّهُمَّ اغْفِرْ لِي، وَارْحَمْنِي، وَاهْدِنِي، وَاجْبُرْنِي، وَعَافِنِي، وَارْزُقْنِي، وَارْفَعْنِي
উচ্চারণঃ আল্লা-হুম্মাগফিরলী, ওয়ারহা’মনী, ওয়াহদিনী, ওয়াজবুরনী, ওয়াআ’ফিনি, ওয়ারযুক্বনী, ওয়ারফাঅ’নী।
অর্থঃ হে আল্লাহ! আপনি আমাকে ক্ষমা করুন, আমার প্রতি দয়া করুন, আমাকে সঠিক পথে পরিচালিত করুন, আমার সমস্ত ক্ষয়ক্ষতি পূরণ করে দিন, আমাকে নিরাপত্তা দান করুন, আমাকে রিযিক দান করুন এবং আমার মর্যাদা বৃদ্ধি করুন।
আবু দাউদঃ ৮৫০, তিরমিযী ২৮৪, ইবন মাজাহঃ ৮৯৮। শায়খ আলবানীর মতে হাদীসটি সহীহ।
উল্লেখ্য, সালাতের ভেতরে দুয়া করলে হাত তুলতে হবেনা, কারণ তখনতো আপনি সালাতে মাঝেই আছেন। সিজদায় গিয়ে প্রথমে সিজদার তাসবীহ পড়বেন, এর পরে অন্য দুয়া করতে পারবেন। আপনার ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোন সিজদাতেই দুয়া করতে পারবেন, নির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই। আরবী ভাষা না জানলে নফল ও সুন্নত সালাতে বাংলা বা অন্য ভাষাতেও দুয়া করা যাবে, ইন শা আল্লাহ, কোন সমস্যা নেই। তবে সতর্কতাবশত ফরয সালাতে অন্য ভাষায় দুয়া না করে শুধুমাত্র আরবী দুয়াগুলো করাই নিরাপদ।
.
(১০) দুয়া করা শেষ হলে ‘আমিন’ অথবা ‘আমিন ইয়া রাব্বাল আ’লামীন’ বলবেন। আমীন অর্থ হচ্ছে, “হে আল্লাহ তুমি আমার দুয়া কবুল করো”।
.
(১১) সর্বশেষ, পুনরায় নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি দুরুদ পড়ে ও আল্লাহর প্রশংসা দিয়ে মুনাজাত শেষ করবেন।
আবু সুলায়মান আদ-দারানি রহি’মাহুল্লাহ বলেন, “যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে কোন কিছুর জন্য দুয়া করতে চায় তাহলে, সে যেন প্রথমে আল্লাহর প্রশংসা অতঃপর, (দুরুদ পড়ার মাধ্যমে) নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের প্রতি শান্তি ও বরকতের জন্য দুয়া করে। এরপর সে তার প্রয়োজনীয় জিনিসের জন্য দুয়া করে। দুয়ার শেষে সে যেন নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লামের জন্য পুনরায় দুরুদ পড়ে। কারণ, মহান আল্লাহ দুইটি দুরুদ অবশ্যই কবুল করবেন, সুতরাং (আশা করা যায় যে), দুইটি দুরুদের মাঝে (বান্দার নিজের জন্য কৃত) দুয়াগুলো মহানুভব পরাক্রমশীল আল্লাহ ফিরিয়ে দেবন না” ইহইয়া উ’লুম আদ-দ্বীনঃ ১/৩৮৬।
.
(১২) দুয়া শেষে হাত দিয়ে মুখ মোছা নিয়ে কোন একটি ‘সহীহ’ হাদীস নেই। ইমাম মুহাম্মাদ নাসির উদ্দীন আলবানী রহি’মাহুল্লাহ বলেছেন, “মুখে হাত মোছা নিয়ে যেই হাদিসগুলো এসেছে তার একটাও সহীহ নয়।” এ কারণে প্রখ্যাত হানাফী আলেম, ইমাম ই’জ্জ ইবনে আব্দুস সালাম রহি’মাহুল্লাহ এই কাজের কঠোর সমালোচনা করে বলেছেন, “একমাত্র জাহেল লোক ছাড়া আর কেউ মুনাজাতের পরে হাত দিয়ে মুখ মোছেনা।” ফাতওয়া ই’জ্জ ইবনে আব্দুস সালামঃ ৪৭।
নবী সাল্লাল্লাহু আ’লাইহি ওয়া সাল্লাম মুনাজাত শেষে হাত দিয়ে মুখ মুছতেন; এটা বিশুদ্ধ হাদীস দ্বারা প্রমাণিত হয়নি। তাই এই কাজ না করাই উত্তম। কারণ ইবাদতের কোন কিছু ক্বুরআন ও সহীহ হাদীসের প্রমান ছাড়া করা যায়না। মুনাজাত শেষ করে আমিন বলে হাত নামিয়ে ফেলবেন।